বিচার চেয়ে এলাকায় মানববন্ধন

তালোড়া পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে স্থানীয় মন্দির কমিটির সভাপতিকে মারপিটের অভিযোগ

মঈন খান, দুপচাঁচিয়া উপজেলা (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:৩৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪৯২ বার।

বগুড়ায় দুপচাঁচচিয়া উপজেলাধীন তালোড়া পৌরসভার মেয়র আমিরুল ইসলাম বকুলের বিরুদ্ধে স্থানীয় একটি মন্দির কমিটির সভাপতি রতন চন্দ্র দাসকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরের ওই ঘটনায় পৌর মেয়রের  বিরুদ্ধে ওইদিন রাতেই দুপচাঁচিয়া থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। ওই ঘটনার বিচার এবং মেয়রের শাস্তির দাবিতে পরদিন রোববার ওই পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের দুই মহল্লার প্রায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ তালোড়া-দুপচাঁচিয়া সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছেন। 


তবে তালোড়া পৌরসভার মেয়র আমিরুল ইসলাম বকুল তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি বিএনপি ঘরানার কয়েকজন কাউন্সিলর যোগসাজস করে তাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মারপিটের মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।


থানায় অভিযোগসূত্রে জানা যায়, মন্দিরের জায়গা সংক্রান্ত একটি ঘটনায় তালোড়া পৌরসভার মেয়র আমিরুল ইসলাম বকুল ১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার পৌর এলাকার লাফাপাড়া (হিন্দুপাড়া) সাবলা হরি মন্দির কমিটির সভাপতি রতন চন্দ্র দাসকে নিজ কার্যালয়ে ডেকে নেন। এরপর তিনি দরজা বন্ধ করে রতন দাসকে প্রথমে ভয়ভীতি দেখায় এবং পরে তাকে মারপিট করে। এ সময় উপস্থিত পৌরসভারই কয়েকজন কাউন্সিলর তাকে উদ্ধার করে তালোড়ায় একটি ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জরুরী ভিত্তিতে নাক-গান ও গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। রতন দাসের অভিযোগ,  তালোড়া পৌরসভার মেয়র আমিরুল ইসলাম বকুল ইতিপূর্বেও তাকে তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করেছেন। কিন্তু তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় প্রাণ ভয়ে কাউকে কিছু বলেননি। রতন চন্দ্র দাস জানান, ওই ঘটনায় পৌরসভার মেয়র আমিরুল ইসলাম বকুলসহ ৪জনের বিরুদ্ধে তিনি শনিবার রাতেই দুপচাঁচিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। 
এদিকে ওই ঘটনায় তালোড়া পৌরসভার মেয়র আমিরুল ইসলাম বকুলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানের দাবিতে লাফাপাড়া ও সাবলা মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে রোববার সকালে স্থানীয় ডায়াবেটিক হাসপাতালের সামনে মানবববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। তালোড়া-দুপচাঁচিয়া সড়কের সামনে ১১ থেকে পৌণে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্তত দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। এ সময় মেয়রের বিচার চেয়ে বক্তৃতা করেন তালোড়া পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, স্থানীয় নেতা জাহাঙ্গীর আলম নজু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ রাজু, পৌর কাউন্সিলর হাসেম প্রামানিক, সাবু প্রামানিক, এমরান সরকার রিপু, এলাকাবাসীর পক্ষে মানিক চন্দ্র মোহন্ত, শ্যাম দাস, সুকৃতি রানী দাস, পারুল রানী দাস ও মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিধু চন্দ্র দাস। বক্তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন বন্ধের দাবী জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন।


দুপচাঁচিয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান তালোড়া পৌরসভার মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’