সব পুড়ে ছাই, আগুনের ছোঁয়াও লাগেনি মসজিদে

প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:০৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৬০ বার।

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় একটি আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর আশপাশের সকল ভবন পুরে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অক্ষত অবস্থায় আছে পাশের মসজিদ ও আরবি কায়দা।

 

মসজিদের ভেতরে যারা অবস্থান নিয়েছিলেন তাদের সবাই সুস্থ অবস্থায় ফিরেছেন।

আজ সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চুড়িহাট্টা জামে মসজিদটি আগুনে পুড়ে অঙ্গার ওয়াহেদ ম্যানশনের পাশেই অবস্থিত।

মসজিদের সামনের অংশ কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে মসজিদের চার পাশের সব ভবনের মতো মসজিদের ভেতরে কোনো ক্ষতি হয়নি।

অথচ মসজিদের সামনেই ছিলো ট্রান্সমিটার। আর আগুনের সূত্রপাত মসজিদের গেটের সামনে থেকেই।

অথচ শুধু চুড়িহাট্টা জামে মসজিদে ভয়াবহ এই আগুনের লেলিহান শিখার কোনো ছোঁয়া লাগেনি।

মসজিদটি অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। বেঁচে গেছেন মসজিদে ঠাঁই নেয়া মানুষেরাও।

তবে বাইরের কিছু টাইলস খুলে পড়া ছাড়া কোনো ক্ষয়ক্ষতি মসজিদটির।

কথা হয় মসজিদের খাদেমের সঙ্গে। তিনি মহান আল্লাহর শুকরিয়া জানিয়ে বলেন, রাস্তার মানুষগুলো এভাবে চলে গেল, ভাবতেই খারাপ লাগছে। তবে যারা মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছেন আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের কিছুই হয়নি।

এসময় মসজিদের ভেতরে অস্থায়ী ফায়ার সার্ভিতে তথ্য কেন্দ্র বসানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এলাকাবাসী  জানান, শাহী মসজিদের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পিকআপ ভ্যানের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফেরিত হয়ে আগুন লাগে। সেই আগুন গিয়ে লাগে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারে। সেখান থেকে কেমিক্যাল মজুদ দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর দাউ দাউ করে কয়েক মুহূর্তেই আগুন ওয়াহাব ম্যানসন ও রাজ্জাক ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আশ্চর্যজনক কথা হলো, আগুন মসজিদের ভেতরে ঢোকেনি।

স্থানীয় বাসিন্দা মনির আহমেদ বলেন, আগুল লাগার পর অনেকেই মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছেন, যারা দোকানে সাটার বন্ধ করে আশ্রয় নিয়েছে তারা সবাই মারা গেছে কিন্তু আল্লাহ রহমতে মসজিদের কোনো ক্ষতি হয়নি, দেখেন আশাপাশে সব বিলডিং পুইরা গেছে।

মসজিদের অপর প্বার্শের মুদি দোকান দেখানে দেখা যায় কৌতূহল ভাবে সবাই ছবি তুলছে একটি আরবি কায়দার, মুদি দোকানের সব কিছু পুরে ছাই হলেও আরবি কায়দার সব আরবি হরফ গুলা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের প্রধান আলী আহমেদ আলজাজিরা টেলিভিশনকে বলেন, একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে। আর ভবনের ভেতর প্লাস্টিকের দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ থাকায় তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- আগুন যখন ছড়িয়ে পড়ছিল, তখন সড়কজুড়ে যানজট ছিল। এতে সরু গলির ভেতর দিয়ে লোকজন পালাতে পারেননি।’

অগ্নিকাণ্ডে আহত হাজী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, আমি নিজ চোখে দেখেছি- ব্যাপক বিস্ফোরণে রাস্তার পাশে দেয়াল ভেঙে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত রাজধানীর চকবাজার এলাকার নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবনে বুধবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে আগুন লাগে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুনের ভয়াবহতা কিছুটা কমলেও আবারও বেড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট একযোগে কাজ করে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।

এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।