বগুড়ার কাহালুতে তৈরি লাচ্ছা সেমাই যাচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলে

মুনসুর রহমান তানসেন, কাহালু থেকে
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২১ ১২:৩৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪১ বার।

বগুড়ার কাহালু উপজেলার কাজীপাড়া, শেখাহার ও ভোলতা এলাকায় বিভিন্ন কারখানায় তৈরী লাচ্ছা সেমাই এখন দেশের প্রায় অধিকাংশ জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রায় দুই যুগ আগে থেকে এই অঞ্চলে রমজান ও দুই  ঈদকে সামনে রেখে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি কারখানায় লাচ্ছা সেমাই তৈরীর কাজ বেশ জোড়েসোড়েই চলে। আগে প্রতি সিজিনে অস্থায়ী প্রায় অর্ধশত কারখানায় যে, পরিমান সেমাই তৈরী হতো এখন মাত্র ১৪ টি কারখানায় তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশী লাচ্ছা সেমাই তৈরী হচ্ছে। প্রতিদিন এখান থেকে ট্রাকে ট্রাকে লাচ্ছা সেমাই ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর বিভাগের অধিকাংশ জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।  বিগত দিনে অনুমোদনবিহীন কারখানা মালিকদের মোটা অংকের টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। যারফলে জরিমানার ভয়ে আগের মত যেখানে সেখানে গড়ে উঠা অস্থায়ী অর্ধশত সেমাই কারখানা নেই। তবে বিভিন্ন সুত্রে পাওয়া তথ্যমতে বর্তমানে কাজিপাড়া, শেখাহার, কাহালু পৌর সদর ও ভোলতায় ১৪টি কারখানায় লাচ্ছা সেমাই তৈরী হচ্ছে। এই কারখানাগুলোর কারো বিএসটিআইয়ের অনুমোদন আছে আবার কারো নেই। তবে এই কম পুঁজির আর কোন কারখানা নেই। এখন যেগুলোতে লাচ্ছা সেমাই তৈরী হচ্ছে সবগুলোই বড় কারখানা।  এই কারখানাগুলোতে রমজান মাসের আগে থেকেই লাচ্ছা সেমাই তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে। রমজান মাসের আগে থেকেই এখান থেকে প্রতিদিন ট্রাকে ট্রাকে সেমাই দেশের অধিকাংশ জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের অর্ডার অনুযায়ি এখানকার কারখানা মালিকরা লাচ্ছা সেমাই প্রস্তুত করে সময়মত সরবরাহ করে আসছে। আবার এখানকার লাচ্ছা সেমাই দামেও অনেকটা কম হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এখানে ছুঁটে আসেন লাচ্ছা সেমাই কেনার জন্য। এখানে কয়েকটি কারখানায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নভাবে লাচ্ছা সেমাই তৈরী করা হলেও আবার কয়েকটি কারখানায় নোংড়া পরিবেশে সেমাই তৈরী করা হচ্ছে। শেখাহার উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে আবু বক্করের কারখানায় লক্ষ করা গেছে যারা সেমাইয়ের খামির তৈরী ও সেমাই তৈরী করছে তাদের হাতে নেই গ্লোবস। শরীর থেকে ময়লা ঘাম ঝড়ে পড়ছে সেমাইয়ের খামিরের ময়দায়। আবু বক্কর জানান, সব কারখানাতেই এভাবে সেমাই তৈরী করা হচ্ছে। সেমাইয়ের বাজার মুল্য ও সেমাই তৈরীর খরচ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার ব্যবসার গুমুর ফাঁক করবেন-না বলে জানান।  বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত সাজ্জাতের কারখানায় দেখা গেছে খুবই পরিস্কার পরিচ্ছন্নভাবে সেখানে সেমাই তৈরী করা হচ্ছে। সাজ্জাত জানান, এবছর করোনার কারণে ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো না। এক খাঁচি সেমাই তৈরীতে প্রায় ১ হাজার ৪০০ টাকা খরচ হয়। কিন্ত সেমাই বিক্রি হচ্ছে প্রায় খরচের সমমুল্যেই।  তার তথ্য মত তারা লাচ্ছা সেমাই পাইকারী ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। আর এই সেমাই বাজারে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যারফলে কম দামে সেমাই কিনে বেশী দামে সেমাই বিক্রির আশায় এখানে বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা সেমাই কিনতে ছুঁটে আসেন। কাহালু হাসপাতালের সেনেটারী ইনেসপেক্টার আঃ সালামও স্বীকার করলেন এখানে যারা লাচ্ছা সেমাই তৈরী করছেন তাদের সবার বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নেই। তার তথ্যমতে সাজ্জাত হোসেন সাজু, হাছেন আলী, সরিফুল, বক্কর, আনোয়ার, আমিনুল আমাকে জানিয়েছেন তারা বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স নবায়ন করেছেন। তারপরেও আমি সরোজমিনে গিয়ে দেখবে কারা সরকারি বিধি মেনে সেমাই তৈরী করছে। আর কারা সরকারি বিধি ভঙ্গ করে সেমাই তৈরী করছে।