বোদায় শেষ হলো ইয়ূথ এগেইনষ্ট হাঙ্গারের তিনদিনব্যাপী লিডার্স মিটিং

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:৩৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৪৭ বার।

পঞ্চগড়ের বোদায় শেষ হলো ইয়ূথ এগেইনষ্ট হাঙ্গারের তিনদিনব্যাপী লিডার্স মিটিং। উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের সিওএফ চত্ত্বরে তিনদিনের কর্মসূচিতে ঢাকা, পঞ্চগড় এবং ঝিনাইদহের যুবনেতারা অংশগ্রহণ করেন। শনিবার বিকাল ৪ টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বোদা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, “মাদকমুক্ত ও ক্ষুধামুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়তে যুবকদের দক্ষ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।”

সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড বোদা পঞ্চগড়ের প্রোগ্রাম অফিসার মালেকা বেগম। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ এর ইয়ূথ কো- অর্ডিনেটর গাজী আনিকা আসলাম, সুনিকেতন পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার, হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড বোদা পঞ্চগড়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার অনিল শর্মা, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার সিজুল ইসলাম, ইয়ূথ এগেইনষ্ট হাঙ্গারের জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাইসুল মিল্লাত সাফকাত, বোদা পঞ্চগড় ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম এবং কালিগঞ্জ ঝিনাইদহ ইউনিটের সভাপতি নাঈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইমন খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর হাসান এবং ক্যাম্পেইন সম্পাদক মহিউদ্দিন সুমন।

আলোচনা শেষে একুশে ফেব্রুয়ারী উপলক্ষ্যে চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ করেন অতিথিরা। চিত্রাঙ্গনে শ্রী শুভ রায় প্রথম স্থান, রিফাত জামান দ্বিতীয় স্থান এবং তামান্না আক্তার তৃতীয় স্থান অর্জন করে । 

তিনদিনের প্রথম দিন একুশে ফেব্রুয়ারীর প্রভাতফেরীর মধ্য দিয়ে শুরু হয় মুল আনুষ্ঠানিকতা । বলরামহাট হাইস্কুলের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানায় লিডার্স মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারী যুবনেতারা। তাদের আয়োজনে সুনিকেতন পাঠশালার শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনার হলে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে “একুশে ফেব্রুয়ারীর তাৎপর্যে আগামীর বাংলাদেশ” রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় জাহিদ হাসান।

এরপর দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে খাদ্য অধিকার আইনের দাবিতে সোচ্চার এই যুব সংগঠনটি ৪ টি দলে বিভক্ত হয়ে হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের কর্মএলাকার ৮ টি গ্রামে খাদ্য, পুষ্টি ও শিক্ষার কি অবস্থা তা জানতে সরেজমিন তথ্য সংগ্রহ করে। তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া ইয়ূথ এগেইনষ্ট হাঙ্গারের সদস্য নাঈমুর রশিদ নয়ন জানায়, আমরা লক্ষ্য করেছি এখানকার মানুষরা চরম পুষ্টিহীনতার সাথে লড়াই করে চলেছেন। অধিকাংশ প্রান্তিক মানুষরাই বর্গাচাষ করে থাকেন ফলে তারা শর্করা ব্যাতিত আমিষ জাতীয় পুষ্টি গ্রহণের ক্ষেত্রে সক্ষম নন কারণ খাদ্য ছাড়াও সংসারের অন্যান্য খরচ এবং সন্তানদের শিক্ষাসহ সকল ব্যয়ভার বহন করা কষ্টসাধ্য। আরো উদ্বেগের বিষয় হলো এখানে পুরুষরা ৩০০ টাকা এবং নারীরা মাত্র ১২০-১৫০ টাকা দিনে মজুরী পেয়ে থাকেন যদিও মেয়েরা বেশি কাজ করেন মাঠে।

ঢাকার বাইরে গ্রামের মানুষের সাথে মেশার সুযোগ হয়নি এমন একজন সদস্য ক্যাম্পেইন সম্পাদক মহিউদ্দিন সুমন তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে জানালো, এখানে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের নিজেদের ঘরে গাভী আছে, হাঁস আছে, মুরগী আছে অথচ গত ছয়মাসেও তারা সুযোগ পায়নি দুধ, ডিম এবং মাংস খাবার। এখানে বাল্যবিবাহ, ধর্মীয় গোঁড়ামী এবং স্বল্পশিক্ষিতের সংখ্যা বেশি থাকায় অধিক সন্তান গ্রহণের প্রবণতা থাকলেও পুষ্টিসম্মত খাদ্য গ্রহণের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ উদাসীন এবং অজ্ঞাত। আমরা এখান থেকে সরেজমিনে পাওয়া তথ্যগুলো ইয়ূথ এগেইনষ্ট হাঙ্গার পরিচালিত বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদে এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে খাদ্য অধিকার আইনের দাবি আদায়ের ব্যাপারে আমরা আরো বেশি সোচ্চার হবো এবং জোড়ালো ভূমিকা রাখব।