যে কারণে পলাশের সঙ্গে বিচ্ছেদ, যা বললেন নায়িকা সিমলা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:২১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৯৬ বার।

বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে কমান্ডো হামলায় নিহত পলাশ আহমদ বিয়ে করেছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকাকে।মাত্র ৮ মাস টিকে ছিল তাদের রঙিন সংসার।এরপরই তাদের প্রেমে ভাটা পড়ে। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন সিমলা।

 

প্রেম করে বিয়ে করার পর কেন পলাশকে তালাক দিলেন সিমলা-এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে।সিমলার ভক্তরাও পলাশের মত বখাটে যুবককে বিয়ে করায় তার সমালোচনা মুখর হয়ে উঠেছেন।

 

পলাশের সেঙ্গ সিমলার বিয়েবিচ্ছেদের কারণ হিসেবে জানা গেছে, দাম্পত্যজীবনে সুখী হতে না পারা, মনের অমিল, দুজনের বনিবনা না হওয়া, পারিবারিক অশান্তি ও সিমলাকে পলাশের মানসিক নির্যাতন।

 

বিভিন্ন কারণে বিচ্ছেদ হলেও ডিভোর্স দেয়ার মূল কারণ হিসেবে সিমলা জানান, দুজনের মানসিক সমস্যা।

 

সোমবার যুগান্তরসহ ঢাকার বিভিন্ন গণমাধ্যমে পলাশের সঙ্গে সিমলার বিয়ের তথ্য প্রকাশের পর ফেসবুকে ছাড়া ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই নায়িকার বক্তব্যের ভিডিও, তার মায়ের বক্তব্য ও চাচাত ভাইয়ের বক্তব্য থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

পলাশ-সিমলার বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে ‘দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাকে’ তুলে ধরেন সিমলার মা নুরুন্নাহার জোৎস্না।

 

নুরুন্নাহারকে উদ্ধৃত করে সিমলার চাচাত ভাই মিল্টন গণমাধ্যমকে বলেন, বিয়ের কিছুদিন যেতেই আমরা জানতে পারি বিভিন্ন শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পলাশের যোগাযোগ আছে। এমনকি কারো কারো সঙ্গে তার নিবিড় যোগাযোগ আছে।বিষয়টি সিমলা মানতে পারছিল না। আমরাও চাচ্ছিলাম না জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ছেলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতে। তাই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া।এই সিদ্ধান্তটি পারিবারিকভাবেই নেয়া বলে জানান নুরুন্নাহার।

 

এদিকে ঘটনার পর রাত থেকে আলোচনার কেন্দ্রে সিমলা। কিন্তু তার কোনো খোঁজ মিলছিল না। সোমবার দুপুরে জানা গেল, তিনি বর্তমানে ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থান করছেন। সকালে তার সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন তার ভাই ভুট্টু মিয়া।

 

ভুট্টু মিয়ার বরাত দিয়ে সিমলার চাচাত ভাই আব্দুর রহমান মিল্টন জানান, সিমলা ভালো আছেন। উনি কোনো টেনশন করছেন না। কারণ পলাশের সঙ্গে বিয়ে হলেও চার মাস আগে বিয়ে-বিচ্ছেদ ঘটেছে তার।

 

গত বছরের ৫ নভেম্বর স্বামী পলাশ আহমেদের ঠিকানায় তালাকের নোটিস পাঠিয়েছেন সিমলা।

নোটিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৬ মার্চ বিয়ে করেন তারা। বয়সে নিজের চেয়ে ১৯ বছরের ছোট পলাশকে বিয়ের ৯ মাসের মাথায় তালাকের সিদ্ধান্ত নেন এ নায়িকা।

 

বিয়েবিচ্ছেদের কারণ হিসেবে শিমলা নোটিসে উল্লেখ করেন, দাম্পত্যজীবনে সুখী হতে না পারা, মনের অমিল, বনিবনা না হওয়া, পারিবারিক অশান্তি ও মানসিক নির্যাতন।

 

আইন অনুযায়ী নোটিস পাঠানোর ৯০ দিনের মাথায় তাদের তালাক কার্যকর হয়েছে।

 

এদিকে পলাশের সঙ্গে সম্পর্ক প্রেম ও বিয়ে নিয়ে গতরাতে একটি ভিডিও বার্তা দেন নায়িকা সিমলা।

 

এতে সিমলা বলেন, ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তার সঙ্গে পরিচয় পলাশের। তিনি তখন পরিচালক রশিদ পলাশের 'নাইওর' ছবি করছিলেন। সেদিন পরিচালক রশিদ পলাশের জন্মদিন ছিল। সেখানে পলাশও আমন্ত্রিত ছিল। সেই অনুষ্ঠানেই পলাশের (বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী) সঙ্গে তার পরিচয় হয়।

 

পরিচয়ের ৬ মাস পর বিয়ে করেন সিমলা ও পলাশ। বয়সে ১৯ বছরের ছোট পলাশকে বিয়ের বিষয়ে সিমলা বলেন, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ আমরা বিয়ে করি।

 

বিয়ের পর মাত্র ৯ মাস টিকে ছিল তাদের সংসার। ৯ মাসের মাথায় তালাকের সিদ্ধান্ত নেন তারা। এ বিষয়ে সিমলা বলেন, ওই বছরেরই ( ২০১৮) নভেম্বরে আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে।

 

পলাশকে ডিভোর্স দেয়ার তথ্য জানিয়ে নায়িকা সিমলা আরও বলেন, ডিভোর্স দেয়ার মূল কারণ হচ্ছে- মানসিক সমস্যা।

 

তিনি বলেন, পেশা হিসেবে আমি যেটা জানতাম-জানি সেটা হলো পরিচালক রশিদের 'কবর' ছবিতে প্রযোজক হিসেবে ছিলেন পলাশ (বিমান ছিনতাইচেষ্টাকারী)। আমি তাকে (পলাশ) একজন প্রযোজক হিসেবেই চিনি।

 

প্রসঙ্গত, ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে পলাশ আহমেদ। সেনাবাহিনীর সদস্যদের ৮ মিনিটের কমান্ডো অভিযানে পলাশ নিহত হন।

 

পলাশের বাড়ি নায়ায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ে।আজ মঙ্গলবার সকালে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।