নওগাঁ সদর ভুমি অফিসের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ

দুর্নীতি যেখানে নীতি, পদে পদে দালাল আর হয়রানী

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৯:৫৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৩২ বার।

নওগাঁ সদরের ভুমি অফিসের বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অনিয়ম, দুুর্নীতি এবং হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। জমি খারিজ সহ প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র নিতে দিনের পর দিন হয়রানীর সাথে গুনতে হচ্ছে ঘুষের টাকা। গত ৬ মাস ধরে এসিল্যান্ড পদ ফাঁকা থাকার কারণেই এ অনিয়ম আর হয়রানী বেড়ে গেছে বলে জানায় তারা। তবে ভুমি কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার দাবী অনিয়ম রোধে চেষ্টা করা হচ্ছে । 

 

স্থানীয়রা আরো জানায়, পদে পদে দালাল আর বাড়তি টাকা না দিলে কোন সেবাই মিলছে না নওগাঁ সদর ভুমি অফিসে । জমি খারিজ ও প্রয়োজনীয় কাগজ নিতে দিনের পর দিন হয়রানীর সাথে রয়েছে এখানে নানা ভোগান্তি। ভুক্তভুগীদের অভিযোগ ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে জমি খারিজ পাওয়ার বিধান থাকলেও এখানে ৫ থেকে ৬ মাস ধরে নানা অজুহাতে আটকে রাখা হচ্ছে। আবার বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সেবা গ্রহিতারা হাতে পাচ্ছে এসব কাগজ। এ দিকে গত ৬ মাস ধরে এসিল্যান্ড পদ ফাঁকা থাকায় অনিয়ম রাজত্ব অনেকটা প্রকাশ্য হয়ে উঠেছে এ ভুমি অফিসে।

 

দালাল নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে খাজনা খারিজের নয় ছয়ের খেলায় অফিসের কর্মকর্তারা সরাসরি থাকলেও স্থানীয়রা সব চেয়ে বেশি অভিযোগ তুলেছে আজিজার নামের এক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে। সদর ইউনিয়নের সাথে তার ভাল সখ্যতায় সব অনিয়ম কে নিয়মে পরিনত করা তার কাজ বলে তারা অভিযোগ করে ।  

 

তবে এ ব্যাপারে আজিজারের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, 'সব অভিযোগ সঠিকক নয় । এখন এসিল্যান্ড পদ ফাঁকা তাই কাজ কর্মে কিছুটা ব্যাঘাত হচ্ছে।' 

 

সদর কৃর্তি পুর এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জমি খারিজ করার জন্য গত ৬ মাস ধরে ঘুরছেন । তিনি জানান, প্রথমে বললো আপনার কাগজে সমস্যা আছে এটা করতে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে । এ ভাবে দু দফায় ১৫ হাজার টাকা দেন তিনি । তিনি বলেন টাকা নেওয়ার সময় তারা এক জন ভিন্ন লোক দেখিয়ে দিয়ে বলে তাকে দেন । এভাবে দিয়ে এখনো কাজ হয়নি । তিনি দাবী করেন কোন কাগজে জটিলতা নেই তার পরও এ হয়রানী করা হচ্ছে শুধু বাড়তি টাকা নেওয়ার জন্য । একই কথা বলেন অপর খারিজ করতে আসা রজাকপুর এলাকার বাসিন্দা পিয়াল তিনি বলেন মার অসুখ চিকিৎসা করানোর জন্য ইন্ডিয়া নিতে হবে এ জন্য জমি খারিজ করতে এসে আজ ৫ মাস ধরে ঘুরছি ।

 

পারুল নামের আর একজন নারী জানান, তার ৫ কাটা জমি খারিজ করার জন্য বিপুল পরিমান টাকা গ্রহন করার পরও কাজ হচ্ছে না।

 

উপজেলা প্রশাসনের কাজ করার পর ভুমি অফিসের বাড়তি দায়িত্ব পালন করা কিছুটা সমস্যার কথা জানিয়ে দায়িত্বরত নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, 'অনিয়ম দুর্নীতি রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার হচ্ছে। কিছুটা অবগত হয়েছি যে ভুমি অফিসে আমার নামে অনিয়ম করা হচ্ছে তবে সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' 
 

জমির খাজনা, খারিজ, রেকর্ড সংশোধন সহ ২০ ধরনের সেবা নিতে নওগাঁ সদরের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ এ ভুমি অফিসে সেবা নিতে আসেন ।