বিএনপি নেতাদের অতিথি করার জের

বগুড়ার শেরপুরে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া : অস্ত্র উদ্ধার

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০১৯ ১৩:০৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৫৭ বার।

বিদ্যালয়ের বার্ষিক অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাদের অতিথি করাকে কেন্দ্র করে বগুড়ার শেরপুরে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।  পরে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।  এসময় একটি ধারালো অস্ত্র (হাসুয়া) উদ্ধার করা হয়।   বুধবার  বিকেলে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ছোনকা বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।  পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, আগামি ৯মার্চ ছোনকা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।  ওই অনুষ্ঠানের দাওয়াতপত্রে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের নাম বাদ দিয়ে বিএনপি নেতাদের নাম দেয়া হয়।  এনিয়ে ভবানীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।  এরইজেরে এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে বলে তারা জানান।  জানতে চাইলে অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস জামান মুকুল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সব দলমতের লোকজনকে নিয়েই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হয়।  তাই বিদ্যালয়ের বার্ষিক অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ ও দলের সহযোগি সংগঠনের নেতাদের অতিথি করার পাশাপাশি স্থানীয় বিএনপি নেতাদেরও অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।  এতে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুজ্জামান সরকার মৃদুল ও তার লোকজন ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা মৃদুলের সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলীর বাকবিতণ্ডা হয়।  পরে ঘটনাটি নিয়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা এসে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে বৈঠক বসেন। সেখানে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়ে তাদের নাম বাদ দিয়ে বিএনপি নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর কারণ জানতে চান।  এসময় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাদের কাছে ভুল স্বীকার করা হলেও মানতে নারাজ।  এমনকি আ.লীগ নেতাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা।  একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা বিদ্যালয়ের সামনে স্থানীয় ছোনকা বাজার এলাকায় সশস্ত্র অবস্থান নেয়।  পরে আ.লীগ নেতাকর্মীরা বৈঠক শেষে স্কুল থেকে বের হলেই সশস্ত্র ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করেন বলে দাবি করেন তিনি।  ভবানীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী জানান, বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে মোবাইল ফোনে জেলা ছাত্রলীগ নেতা মৃদুলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়।  এরই জেরধরে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দামের নেতৃত্বে বেশকয়েকজন ব্যক্তি তাদের ধাওয়া করে বলে তিনি অভিযোগ করেন।  এদিকে বক্তব্য জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুজ্জামান সরকার মৃদুল ঘটনাটি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না দাবি করে বলেন, শুনেছি ছাত্রলীগ নেতাদের নাম বাদ দিয়ে বিএনপি নেতাদের অনুষ্ঠানে অতিথি করা হয়েছে।  এনিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এছাড়া তেমন কোন ঘটনার খবর তাঁর জানা নেই। পাশাপাশি ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাও জানা নেই বলে দাবি করেন তিনি। তবে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম ধারালো অস্ত্রটি উদ্ধারের ঘটনাটিকে সাজানো নাটক হিসেবে অভিহিত করেন। পাশাপাশি তারা কারো ওপর ধাওয়া করেননি দাবি করেন তিনি।  শেরপুর থানার এসআই পুতুল মোহন্ত এ প্রসঙ্গে বলেন, পুলিশ যাওয়ার খবর পেয়েই উভয়পক্ষের লোকজন চলে যায়।  তাই ঘটনাস্থলে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।  তবে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় কে বা কারা ওই ধারালো অস্ত্রটি ফেলে যায়।  পরে সেটি উদ্ধার করে থানায় আনা হয়।  বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।