ভারতের সেই রাফাল চুক্তির সব নথি চুরি!

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০১৯ ১৩:৩৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৬৭ বার।

ফ্রান্স থেকে রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয় কেলেঙ্কারি নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে এবার নতুন তথ্য জানাল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

রাফাল চুক্তির সব নথি চুরি হয়েছে জানিয়ে রাফাল নিয়ে সুপ্রিমকোর্টকে পুনর্বিবেচনার আরজি খারিজের আবেদন করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগোপাল আদালতে এ আবেদন জানান। খবর এনডিটিভি ও নিউজ এইটিনের।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেই এই নথিপত্রগুলো চুরি হয়েছে জানিয়ে বলা হয়, ওই মন্ত্রণালয়ের সাবেক বা বর্তমান কর্মচারীরা চুরিতে সাহায্য করেছে।

ফ্রান্সের সঙ্গে রাফাল বিমান চুক্তিতে দুর্নীতি হয়েছে বলে যখন মোদিবিরোধীরা সরব, ঠিক সে মুহূর্তে এ নথিগুলো চুরির কথা জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে রাফাল দুর্নীতি নিয়ে ভারতের ‘চৌকিদার’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘চোর’ ও ‘আম্বানিদের দালাল’ বলে সমালোচনা করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।

বুধবার রাফাল মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল সুপ্রিমকোর্টে জানান, রাফাল সংক্রান্ত নথিগুলো চুরি হয়ে গিয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই সেগুলো আদালতকে দেখানো যাচ্ছে না। টানা ৩ ঘণ্টা শুনানির পর রাফাল মামলার শুনানি ১৪ মার্চ পর্যন্ত পেছানো হয়েছে।

গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর ভারতীয় সুপ্রিমকোর্ট জানিয়েছিল, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং তদন্তের প্রয়োজন নেই। এই চুক্তিতে আর্থিক দুর্নীতি হয়নি। ১২৬-এর জায়গায় ৩৬টি বিমান কেনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তা একেবারেই অনুচিত বলে রায় দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। তাছাড়া বিমান কেনার প্রক্রিয়ায় কোনও সমস্যা নেই জানিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বানিজ্যিক পক্ষপাতিত্বের যে অভিযোগ উঠেছে তাও ভিত্তিহীন জানায় সুপ্রিমকোর্ট।

এরপরই রায়ের পুনর্বিবেচনার আরজি জানিয়ে মামলা করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা, অরুণ সৌরি ও আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ।

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধাবস্থার মধ্যে সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, তার দেশ যদি সঠিক সময়ে রাফাল যুদ্ধবিমান কিনতে পারত, তবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক লড়াইয়ের ফল ভিন্ন হতেও পারত।

ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়া টুডে মিডিয়া গ্রুপের সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ভারতের এখন রাফাল যুদ্ধবিমান দরকার। ফ্রান্স থেকে তারা এ বিমান ক্রয় করতে চাইছেন।

বিরোধী দল কংগ্রেসের কাছ থেকে দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর এ চুক্তি নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম হয়েছে।

২০১৬ সালে করা রাফাল চুক্তিতে সরকার বড় অনিয়ম করেছে বলে অভিযোগ তোলে বিরোধী দলগুলো। অভিযোগ, দুই-দুইবার করে করা হয়েছে এই চুক্তি। সেটা ভারতের কোম্পানি রিলায়েন্সের মালিক আম্বানি গোষ্ঠীর স্বার্থেই। ধনকুবের ব্যবসায়ী অনিল আম্বানির ভুঁইফোড় সংস্থা রিলায়েন্স ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজকে কাজ পাইয়ে দিতে পুরনো চুক্তি বাতিল করে নতুন চুক্তি করা হয়।

সম্প্রতি ফ্রাঁসোয়া ওলান্দ চুক্তির অনিয়ম স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ভারতে বিমান তৈরির কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিল আম্বানির কোম্পানির নামই প্রস্তাব করে মোদির সরকার। আম্বানির সংস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভারত সরকার চাপও দিয়েছিল। খবর যুগান্তর অনলাইন