সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ছাত্রদল নেতা এখন ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী!

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ জুন ২০২১ ১৩:৫৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭৮ বার।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় রবিন হাসান রকি নামে এক ছাত্রদল নেতা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ বাগিয়ে নিতে তৎপর হয়ে উঠেছেন। বর্তমানে তিনি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদে আছেন। এতে করে প্রকৃত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্য তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, ২০১৪ সালে ছাত্রদলের গঠিত কমিটিতে রবিন হাসান রকি ছিলেন বেলকুচি উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। কমিটির মেয়াদ অনুযায়ী ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তার চাচা আতাউর রহমান ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।

২০১৮ সালে ছাত্রদলের কমিটিতে থাকাবস্থায় রকি চাচার হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। যোগদান করেই স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ নেতার সহায়তায় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন। বর্তমানে বেলকুচি ছাত্রলীগের সভাপতি পদ বাগিয়ে নিতে তৎপর হয়ে উঠেছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্যও তাকে এককভাবে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করতে জেলা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাদের কাছে সুপারিশ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে প্রকৃত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্য তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জানান, ২০১৩ সালে এই রবিন হাসান রকি ও তার চাচা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের নেতৃত্বে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে। তাদের হাতে বহু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যকজনক সংগঠনের কিছু স্বার্থান্বেষী নেতার প্ররোচণায় আওয়ামী লীগে যোগদান করেই তিনি জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ হাতিয়ে নেন।

সম্প্রতি বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় রবিন হাসান রকি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন। ছাত্রদলের একজন পদধারী ক্যাডার যদি দলে যোগদান করেই ছাত্রলীগের সভাপতি পদ পায়, তবে দলের জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন প্রকৃত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

কমিটি গঠন নিয়ে বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বেলকুচি পৌরসভার মেয়র তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, গুঞ্জন কমিটিতে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে সেটা যদি সত্য হয়...তাহলে বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে কলঙ্কের অধ্যায়ের অশুভ সূচনা হবে!

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা রবিন হাসান রকি জানান, আমি কখনো ছাত্রদলের সাথে জড়িত ছিলাম না। ছাত্রদলের প্যাডের কমিটিতে আমার নাম দেখানো হচ্ছে, তা একটি ভুয়া ও সাজানো নকল করা কাগজ। মূলত আমার বিরুদ্ধে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তিনি জানান, আমার চাচা আতাউর রহমান বিএনপি করলে তো আমি বিএনপি করি না। আমি ছাত্রলীগের সাথেই জড়িত ছিলাম।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহমেদ জানান, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে রবিন হাসান রকি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে হাবিবকে স্থানীয় সংসদ সদস্য মমিন মণ্ডল প্রাথমিকভাবে চাইছেন। কিন্তু রকির বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ ওঠায় কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বন্ধ রেখে সেগুলো তদন্ত করা হচ্ছে।