বগুড়ার শেরপুরের বিশ্বসেরা শিক্ষক শাহনাজ পারভীন পাঁচদিনের সরকারি সফরে মালয়েশিয়া গেছেন

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০১৯ ১১:৩৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৭৯২ বার।

পাঁচদিনের সরকারি সফরে মালয়েশিয়া গেলেন ‘বিশ্বসেরা শিক্ষক’ পুরস্কারপ্রাপ্ত বগুড়ার শেরপুর উপজেলা সদর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহনাজ পারভীন। গত ০৮মার্চ থেকে আগামি ১২মার্চ পর্যন্ত চলা আন্তর্জাতিক নারী স্কাউটিং সম্মেলনে অংশ নিতে সেখানে গেছেন তিনি। সম্মেলনে শেষে আগামি ১৪মার্চ দেশের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া ত্যাগ করবেন এবং ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের সহকারি সচিব জাহাঙ্গীর আলমের স্বাক্ষরিক পত্রে এই তথ্য জানা যায়।

 

শিক্ষক শাহনাজ পারভীন নিজের পেশায় অনবদ্য ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা অর্জনে অবদান রাখায় বিগত ২০১৭সালে ‘বিশ্বসেরা শিক্ষক’ (গ্লোবাল টিচার প্রাইজ) পুরস্কার পান। লন্ডনভিত্তিক ভারকি ফাউন্ডেশন বিশ্বেও ১৭৯টি দেশ থেকে ২০হাজার আবেদনকারীর মধ্যে থেকে ৫০জনের তালিকা করেন। এরমধ্যে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ‘বিশ্বসেরা শিক্ষক’ (গ্লোবাল টিচার) পুরস্কার পান শিক্ষক শাহনাজ পারভীন। এর আগেও ২০১০ সালে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সেরা শিক্ষকের পুরস্কারেও ভূষিত হন শাহনাজ। তার তিন বছর পর দেশের সেরা শিক্ষকের মর্যাদাও পান তিনি।

 

শাহনাজ পারভীন ১৯৭৬ সালে বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী দাড়িগাছা গ্রামে এক শিক্ষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম মানিক উল্লাহ ও মা মিসেস নুরজাহান বেগম পেশায় শিক্ষক। মায়ের কর্মস্থল শেরপুর পৌরশহরের উলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৫ সালে পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তিলাভ করেন। পরে ১৯৯২ সালে একই মাদ্রাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে আলিম পাস করেন। এরপর বগুড়া সরকারি আযিযুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্র জীবনে বিভিন্ন সাময়িকীতে লেখা ছাপা হতো।

বিশ্বসেরা ৫০ শিক্ষকের তালিকায় থাকা বাংলাদেশের শাহনাজ পারভিন বগুড়ার শেরপুর উপজেলা সদর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০৩ সালে  সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। শিক্ষকতা পেশায় যোগদানের পর তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখে চলেছেন। তিনি ২০১০ সালে “প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে ব্যর্থ” এ বিষয়ের উপর গবেষণা পত্র “অনুসন্ধান” রচনা করেন। ২০১৪ সালে “পাখির মুখে ফুলের হাসি” নামে একটি ছড়ার বই প্রকাশ করেন। ২০১০ সালে তিনি জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ এবং ২০১৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে তিনি উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কাব লিডার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ২০১৭ সালে একুশে পদক পাওয়ার জন্য রাজশাহী বিভাগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন।