শিক্ষায় অবদান: ট্রাকচালক ফারুক পেলেন প্রধানমন্ত্রী পদক

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০১৯ ১৫:২১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২৬ বার।

অভাবের সংসারে নিজে পড়ালেখা করতে পারেননি দিনাজপুরের সদর উপজেলার কাশিমপুর (মালিপুকুর) গ্রামের ফারুক আহমেদ। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেই হাল ধরতে হয়েছে সংসারের। চাকরি নেন বিএডিসি’র ট্রাকচালকের। খবর দেশ রুপান্তর 

কিন্তু শিক্ষার প্রতি তার আগ্রহ মরে যায়নি। নিজের বেতনের ২৫ শতাংশ দিয়ে শি্ক্ষাউপকরণ কিনে বিতরণ করতে থাকেন। পাশাপাশি তিনি ও তার স্ত্রী সাবেরা আক্তার মিলে নিজ বাড়ির আঙিনায় গড়ে তোলেন বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র।

শিক্ষানুরাগী ফারুক আহমেদ এসব কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রাথমিক শিক্ষা পদক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তার হাতে এ পদক তুলে দেন। ২০১৯ সালের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহে সারা দেশে শ্রেষ্ঠ বিদ্যোৎসাহী সমাজকর্মী হিসেবে তিনি এ সম্মান অর্জন করেছেন।

দিনাজপুরের সদর উপজেলার কাশিমপুর (মালিপুকুর) গ্রামে ১৯৮৮ সালে ১২ মার্চ ফারুকের জন্ম। চেরাডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করেন তিনি। এরপর শহরের পুলহাট বিএডিসি’র বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে বস্তা টানার কাজ করেন। ২০০৭ সালে মাস্টাররোলে বিএডিসির ট্রাকের সহকারী হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৭ সালে বিএডিসি’র রংপুর যুগ্ম পরিচালকের দপ্তরের ট্রাক সহকারী হিসেবে স্থায়ী নিয়োগ পান।

পদক পাওয়ার বিষয়ে ফারুকের সঙ্গে কথা বললে তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পদক পাওয়ার বিষয়টি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আমাকে চিঠি দিয়ে জানায়। আমি যে সম্মান পেয়েছি তা হয়ত পড়ালেখা শেষ করেও পেতাম না। কিন্তু আমি এই সমাজের জন্য, দেশের জন্য, আমাদের চারপাশের মানুষের জন্য কোনো কিছু পাওয়ার আশায় করিনি’।

‘আমি নিজে পড়তে পারিনি এই আফসোসের বিষয়টা আমার কাছে কতটা কষ্টের সেটা তো কাউকে বোঝাতে পারব না। তাই আমি চাই, টাকার অভাবে কোনো গরিব মেধাবী ছাত্রছাত্রী যেন পড়ালেখা থেকে পিছিয়ে না পড়ে।‘

তিনি আরো বলেন, কখনো কল্পনা করতে পারিনি এমন সম্মান আমি পাব। কিছু পাওয়ার আশায় এই কাজ করিনি। তবে এ সম্মান আমাকে আরও উৎসাহিত করবে।