ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা: ফারুকের অপেক্ষায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৬:৫৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৮ বার।

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে ঝরে গেছে ৫০ প্রাণ। নিহতদের মধ্যে চার বাংলাদেশিও রয়েছেন।

যে দুটি মসজিদে বন্দুকধারীরা হামলার চালায় তার একটিতে জুমার নামাজ পড়েন নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ওমর ফারুক (৩৫)। ঘটনার পর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে শনিবার নিউজিল্যান্ডের হাসপাতালে তার লাশ শনাক্ত করা হয়। তবে ফারুক মারা যাওয়ার বিষয়টি এখন তার মাসহ পরিবারের সব সদস্যকে জানানো হয়নি।

এদিকে ওমর ফারুকের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সানজিদা জামান নিহা। নিহার সঙ্গে ফারুকের বিয়ে হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর। বিয়ের কিছু দিন পর ফারুক ভাগ্যবদলাতে নিউজিল্যান্ড চলে যান। গত বছরের ১৬ নভেম্বর ছুটিতে দেশে আসেন। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি ফের কর্মস্থলে চলে যান। নিহা বর্তমানে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বামীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন নিহা।

সানজিদা জামান নিহা জানান, ওমর ফারুকের সঙ্গে তার সবশেষ কথা হয় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৫১ মিনিটে (নিউজিল্যান্ড সময় শুক্রবার সকাল ৮টায়)। এর পর থেকে তার ফোন বন্ধ। নিহা জানান, তার স্বামী বেঁচে আছেন কিনা তা তিনি এখনও নিশ্চিত নন। কারণ সরকারিভাবে তাকে কিছুই জানানো হয়নি।

ওমর ফারুকের ভগ্নিপতি সারোয়ার হোসেন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তারা নিউজিল্যান্ডে ওমর ফারুকের সঙ্গে থাকা রুমমেট ও অন্যদের কাছ থেকে মৃত্যুর খবর পেয়েছেন।

নিউজিল্যান্ডে থাকা বেশ কয়েক বাংলাদেশি প্রবাসী এ বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তুলে ধরা চার বাংলাদেশির মৃত্যুর তালিকায় ওমর ফারুকের নাম রয়েছে।

পরিবারের দাবি, যে মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে নিয়মিত ওই মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতেন ফারুক। কিন্তু শুক্রবার হামলার পর থেকেই ওমর ফারুকের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।

ওমর ফারুক বন্দরের রাজবাড়ী এলাকার মৃত আ. রহমানের ছেলে। তিনি নিউজিল্যান্ডে একটি কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করতেন। ওমর ফারুকের পাসপোর্ট নম্বর হলো বিসি-০১৪৪৪১০।

ওমর ফারুকের ভগ্নিপতি সারোয়ার হোসেন জানান, এ হামলার কথা তার মাকে জানানো হয়নি। বাড়ির লোকজন সবাই উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।

সারোয়ার আরও বলেন, ফারুকের খবর জানার জন্য তারা নিউজিল্যান্ডের কনসালট্যান্ট শফিকুর রহমানের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছেন। শনিবার ফারুকের রুমম্যাটের সঙ্গে কথা হয়।

এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার নিউজিল্যান্ডের হাসপাতালে ফারুকের লাশ শনাক্ত করার খবর পেয়েছি। তার গায়ে দুটি গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানা গেছে। বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল বলেন, হামলার পর থেকে ফারুক নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার তার লাশ শনাক্ত করা হয়।