দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে মেয়েকে বিক্রির সময় বাবা আটক

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ মার্চ ২০১৯ ১৪:৩৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৯৩ বার।

১৩ বছর বয়সী নিজের কন্যাসন্তানকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে বিক্রির সময় গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ আটক করেছে এক পাষণ্ড পিতাকে। এ সময় শিল্পী (৩৫) নামের এক যৌনকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে।

গ্রেফতার ব্যক্তির বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায়। এ ঘটনায় রোববার দুপুরে গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই ওলিয়ার রহমান বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত দুই আসামির বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা করেছেন।খবর সমকাল অনলাইন

বিক্রির হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কিশোরী জানায়, তার বাবা-মায়ের অনেক আগেই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। বাবা ও মা দু'জনই আবার বিয়ে করে সংসার করছেন। সে কখনও দাদির কাছে, কখনও ফুফুর কাছে আবার কখনও মায়ের কাছে থাকত। 

এ পরিস্থিতিতে তার বাবা তাকে বলেন, 'তোমার খাওয়ার খরচ দিয়ে আমি তোমাকে ঢাকায় ভালো একটি জায়গায় রেখে দেব, সেখানে তুমি ভালো থাকবে।' বাবার কথায় রাজি হয়ে গত শনিবার সে বাবার সঙ্গে ঢাকা উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু তার বাবা তাকে ঢাকা না নিয়ে সরাসরি দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে নিয়ে আসে। 

এ সময় সে তার বাবার বিচার চায় কি-না জানতে চাইলে কিশোরী কান্না করতে করতে বলে, 'আব্বু ভুল করে ফেলেছে। আব্বুকে ভালো হওয়ার জন্য একবার সুযোগ দেন স্যার।' এ সময় এক নরপশু পিতার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা দেখে উপস্থিত সবার মধ্যে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সে কোথায় যেতে চায় জানতে চাইলে সে বলে, 'আমি আমার মায়ের কাছে যেতে চাই।'

যৌনকর্মী শিল্পী জানায়, উদ্ধার হওয়া কিশোরীর বাবা দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে যাতায়াতের সূত্র ধরে যৌনকর্মী শিল্পীর সঙ্গে তার পরিচয়। কিশোরীর বাবা শিল্পীকে প্রস্তাব দেয়, একটি মেয়ে এনে দিলে তাকে ৮০ হাজার টাকা দিতে হবে। কিন্তু শিল্পী তাকে ৩০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। এই ৩০ হাজার টাকার জন্যই ওই ব্যক্তি মেয়েকে যৌনপল্লীতে নিয়ে আসে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মো. এজাজ শফী জানান, প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল শনিবার রাতে ছদ্মবেশে যৌনপল্লীতে বিক্রির সময় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। এ সময় হাতেনাতে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়। 

উদ্ধার হওয়া কিশোরীর নির্ভরযোগ্য কোনো অভিভাবক না থাকায় আদালতের মাধ্যমে ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত সরকারি সেভ হোমে রাখার আবেদন করা হবে।