শেরপুরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করলেন মাদক ব্যবসায়ী দুই ভাই
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
‘জীবনে আর কোন দিন মাদক ব্যবসা করবো না, নিজে মাদক সেবন করবো না, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবো, অন্যদেরও এই কারবার থেকে ফিরে আসার অনুরোধ করছি’-এসব বলে অতীত জীবনের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনাসহ মাদক ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করলেন মাদক বিক্রেতা দুই ভাই শাহজাহান আলী সাজু ও সনম ওরফে রাজু আহম্মেদ। বুধবার (২০মার্চ) বিকেলে বগুড়ার শেরপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন তারা। এসময় তাদের মা মোছা. মমতাজ বেগম উপস্থিত ছিলেন। উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের রণবীরবালা গ্রামের জহুরুল ইসলাম মিলনের ছেলে তারা।
শহরের স্থানীয় বাসষ্ট্যান্ডস্থ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে লিখিত বক্তৃতায় শাহজাহান আলী সাজু বলেন, অসৎ বন্ধুর সঙ্গে মেলামেশাসহ নানা কারণে এই অবৈধ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলাম। নিজে মাদক সেবন করতাম। পাশাপাশি বিক্রিও করেছি। যার কারণে একাধিক মামলায় জেল খেটেছি। বর্তমানেও একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকায় নিয়মিত হাজিরা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। এই ব্যবসা করলে আমাদের পরিবারের কোন মানুষই সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবে না। এছাড়া আমাদের আগামির উজ্জল ভবিষ্যৎ একেবারেই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই বেশকিছুদিন আগে থেকেই মাদক সেবন ও ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছি। সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি। এরপরও মাঝেমধ্যেই আইন শৃঙখলাবাহিনীর সদস্যসা আমাদের ধরতে অভিযান চালায়। ফলে অজানা আতঙ্ক নিয়ে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। তাই বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেও অবহিত করছি। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি যারা মাদক ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে তাদের পুর্নবাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাই আমরা দুই ভাই এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। জীবনে আর কখনও এই মাদক ব্যবসা করবো না। নিজেরাও মাদক সেবন করবো না। এই প্রতিজ্ঞার পাশাপাশি অন্যদেরও এই কারবার থেকে সুস্থজীবনে ফিরে আসার আহবান জানান তারা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) বুলবুল ইসলাম জানান, পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক বিক্রেতা ওই দুই ভাই মাদক ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে আসার অঙ্গীকার করেছেন বলে শুনেছি। এরপরও তাদের ওপর পুলিশি নজরদারি অব্যাহত থাকবে। সুস্থভাবে জীবন যাপন করলে পুলিশ আর তাদের ধরবে না। বরং পুলিশের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। অন্যথায় আবারও যদি এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তাহলে তাদেও আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।