এরদোগানের কঠোর সমালোচনায় সৌদি মিডিয়া

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০১৯ ১২:২৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৭৩ বার।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানের কঠোর সমালোচনায় নেমেছে সৌদি আরবের মিডিয়া। গত সপ্তাহে ক্রাইস্টচার্চে হামালার ঘটনায় এরদোগানের বক্তব্যকে ‘নীচ’, ‘আক্রমণাত্মক’ ও ‘বেপরোয়া’ বলে বর্ণনা করেছে বিন সালমানের ভাই তুর্কি বিন সালমান আল সৌদের মালিকানাধীন সংবাদ মাধ্যম আরবনিউজ।

ওই নিউজে ডাইনোসরের সঙ্গে এরদোগানের ছবি ব্যবহৃত হয়। ওই ছবিটি আঙ্কারার একটি পার্ক উদ্বোধনের ছবি, যাতে তার পেছনে ডাইনোসরের ছবি ছিল।

এর আগে মঙ্গলবার ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে হামলার ঘটনায় জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান।

তিনি নিউজিল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে বলেন, নিউজিল্যান্ড হামলার ব্যাপারে কোনো ব্যব্স্থা না নেয় তাহলে তিনি সন্ত্রাসীর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।

আরব নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়, এরদোগানের বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে অস্ট্রেলিয়া সমন জারি করেছে ক্যানবেরায় থাকা তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ঘটনার ব্যাখ্যা জানতে আঙ্কারায় গিয়ে ফেস টু ফেস কথা বলবে বলেও জানানো হয়েছে।

গত সপ্তাহে শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্টের (২৮) হামলায় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে ৫০ জন নিহত হয়েছে। শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে নরহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত মঙ্গলবার এরদোগান একে পার্টির নির্বাচনী সমাবেশে নিউজিল্যান্ডকে মৃত্যুর দণ্ডকে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান। এতে তিনি বলেন, যদি নিউজিল্যান্ড তাকে শাস্তি দিতে না পারে তাহলে তুরস্ক তার শাস্তি দেবে।

এরদোগান বলেন, তুরস্কের মুসলমান-বিদ্বেষী অস্ট্রেলিয়ানদের গালিপোলিতে তাদের পূর্বপুরুষের মতো কফিনে ফেরত পাঠানো হবে।

কিন্তু রিয়াদের আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষকরা বলেছেন, এরদোগানের এমন বক্তব্য মুসলমানদের নেতৃত্ব বহন করে না।

ড. হামদান আল-শেহরি আবর নিউজকে বলেছেন, এরদোগান একজন প্রোপাগান্ডিস্ট ও আনপ্রেডিক্টিবেল (অনিশ্চিত) রাজনীতিবিদ। তিনি এ ধরনের জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়েছেন নির্বাচনের জয় লাভের জন্য।

তিনি বলেন, একজন রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে তিনি অনপযুক্ত আচরণ করেছেন। আল-শেহরি প্রশ্ন রেখে বলেন, কোনো রাষ্ট্রপতি এই ধরনের ভাষা ব্যবহার করেন এবং এ ধরনের মন্তব্য করেন?

তার ভাষণে, এরদোগান বলেন যে ১৯১৫ সালে গ্যালিপলি উপদ্বীপ থেকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বাহিনী তাদের রাশিয়ান মিত্রদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় ছিল। এই হামলাটি ছিল একটি সামরিক দুর্যোগ। এতে ১১ হাজারের বেশি অস্ট্রেলিয়ান ও নিউজিল্যান্ড বাহিনীকে হত্যা করা হয়েছিল।

উভয় দেশের হাজার হাজার মানুষ যুদ্ধ স্মৃতিসৌধের জন্য প্রতি বছর তুরস্ক ভ্রমণ করেন। ২৫ এপ্রিলকে আনজাক দিবস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই পরিবেশে তুরস্কের প্রেসিডেন্টর বক্তব্য অস্ট্রিলিয়ার জন্য ব্যাপক আক্রমণাত্বক ও বেপরোয়া বলে মন্তব্য করেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। এ ঘটনায় ক্ষমা প্রকাশ করা জন্য তুরস্কের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছেন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী। এতে মরিসন বলেন, আমি আশা করছি এ ধরনের বক্তব্য পরিস্কা বা প্রত্যাহার করতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন বলেছেন, এরদোগানের এমন বক্তব্যে সরাসরি ব্যাখ্যা জানাতে।