বৈঠক শেষে যেসব কর্মসূচি দিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০১৯ ১৫:২৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৯ বার।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবের প্রতিবাদসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামী ৩০ মার্চ রাজধানী ঢাকায় মানববন্ধন করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

এছাড়া একাদশ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে এপ্রিল মাস থেকে বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে সভা-সমাবেশ-গণশুনানির মতো কর্মসূচি করবে তারা।

শুক্রবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের শেষে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এ কথা জানান।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক থেকে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

এর মধ্যে রয়েছে- ২৬ মার্চ সকাল ৯টায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং ৩১ মার্চ বিকাল ৩টায় রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা।

গণমাধ্যমকে মান্না আরও বলেন, ‘গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, নিরাপদ সড়ক, উপজেলা নির্বাচনে অব্যবস্থা, ডাকসু নির্বাচনে অব্যবস্থা তথা ভোট ছিনতাইসহ সামগ্রিকভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ছিনতাই করা, দেশের সীমাহীন অর্থনৈতিক বৈষ্যম বৃদ্ধিসহ সরকার লুটপাটের ব্যবস্থা কায়েম করেছে- এর প্রতিবাদ আগামী ৩০ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরা মানববন্ধন করব।’

মান্না বলেন, ‘আমরা সারা দেশে এপ্রিল মাসে বিভাগীয় শহরগুলো কর্মী সমাবেশ, সমাবেশ অথবা গণশুনানি শুরু করব। এরপর আমরা জেলাগুলোতে যাব। সারাদেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ তারিখ রাতে ডাকাতি করে নিয়ে যাওয়া পরে মানুষ ভোটের প্রতি শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলেছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে যায়নি, উপজেলা নির্বাচনের দিনও মানুষ ভোট দিতে যায়নি। পুরো দেশের মধ্যে এ কথা ছড়িয়ে আছে। নির্বাচন কমিশনও স্বীকার করছে। ইসির পাশাপাশি যারা বর্তমান সরকারের সঙ্গে আছে, যুক্তফ্রন্টের নেতা একজন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বলেছেন, পুরো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়ছে, দেশ অস্তিত্বের সংকটে’।

মান্না বলেন, ‘এই প্রেক্ষিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আজকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা যে দাবি করেছিলাম এই নির্বাচন (একাদশ সংসদ) বাতিল করতে হবে, নতুন নির্বাচন দিতে হবে- এই দাবিতে আমরা অটল আছি। সেই দাবির ভিত্তিতে আমরা লড়াই গড়ে তুলব। বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।’

বৈঠক শেষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব অভিযোগ করে বলেন, ‘ইতিমধ্যে ডাকসু নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে, নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন হয়েছে। সরকার স্বীকার করেছে নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা বিধানে তারা ব্যর্থ হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট ছিনতাই ও ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে, বিনা নির্বাচনে অনেকে নির্বাচিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যারা ঋণখেলাপি, জনগণের আমানতের কোটি কোটি টাকা লুট করে নিয়েছে, যেটা কোনোদিন পরিশোধ হবে না। ১ শতাংশ বিনিময়ে সব টাকা মওকুফ করে দেয়ার একটা সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে- আমরা এটা প্রত্যাখ্যান করছি’।

রব বলেন, ‘বছরের পর বছর নাগরিকরা অপহরণ হয়ে যাচ্ছে- এটা জনগণের মধ্যে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। দেশের যুব সমাজ-ছাত্র সমাজ, জনগণ হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে- দেশে কী চলছে? একদলীয় শাসন না স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী ডিকটেটরি শাসন। এর বিরুদ্ধে জাতি আজকে চাইছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভূমিকা রাখুক। আমরা এপ্রিল মাস থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি দেয়ার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, রফিকুল ইসলাম পথিক, নাগরিক ঐক্যের শহিদুল্লাহ কায়সার, জাহেদ-উর রহমান, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হাবিবুর রহমান তালুকদার, ইকবাল সিদ্দিকী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের শাহ আহমেদ বাদল, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।