হংকং পুলিশ যা পারেনি, তা পেরেছে বাংলাদেশের পুলিশ!

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০১৯ ১৫:৪১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৭৫ বার।

১৪ মার্চ রাত ২টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামেন ব্যবসায়ী দারমস ওমর। এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে দেখেন তার কাছে মোবাইল ফোনটি নেই। বিষয়টি তিনি বিমানবন্দরের কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের জানান।

পরদিন বিষয়টি জানান তুর্কি দূতাবাসে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে সাইবার সিকিউরিটি ইউনিটকে তা জানানো হয়। সাইবার সিকিউরিটির একটি টিম এয়ারপোর্টের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। সেখানে দেখা যায়, লাল শার্ট পরা এক ব্যক্তি মানি এক্সচেঞ্জের একটি কাউন্টার থেকে আইফোনটি নিয়ে যাচ্ছেন। দারমস ওই মানি এক্সচেঞ্জের দোকান থেকে ডলার ভাঙিয়ে সেখানে ফোনটি ফেলে এসেছিলেন।

সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আজহারুল ইসলাম মুকুল জানান, তারা ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় লাল্টু হোসেন নামে ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেন। কিন্তু মোবাইল নিয়ে যাওয়া ওই ব্যক্তি মালয়েশিয়া থেকে ডিপোর্ট হয়ে দেশে এসেছেন। তার কোনও পাসপোর্ট ছিল না। দূতাবাসের একটি কাগজে শুধু তার নাম ও ছবি ছিল। এ কারণে তার বিস্তারিত ঠিকানা বের করাও কঠিন হয়ে পড়ে। পরে এয়ারপোর্টের বিভিন্ন পয়েন্টের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে লাল্টুর সঙ্গে আরেক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়। পরে ইমিগ্রেশন পুলিশের সহায়তায় তার পরিচয়ও উদঘাটন করা হয়। তবে আসের উদ্দিন মল্লিক নামে ওই ব্যক্তিও মালয়েশিয়া থেকে ডিপোর্ট হয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। তারও বিস্তারিত ঠিকানা ছিল না। তবে আসের উদ্দিনের নথিপত্রে থাকা একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে প্রযুক্তির সহায়তায় যশোরের ১১ জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। পরে সেখান থেকে চিহ্নিত করা হয় মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া ওই ব্যক্তিকে।

পুলিশ কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম মুকুল বলেন, ‘আমাদের একটি টিম যশোর গিয়ে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে মোবাইলটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। সে মোবাইলটি পড়ে থাকতে দেখে সেটি এয়ারপোর্টের কাউন্টারে জমা না দিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বলে জানায়।’ তিনি বলেন, ‘ডিপোর্ট হয়ে শূন্যহাতে দেশে ফিরে আসার কারণে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল বিদেশি নাগরিকের হারানো মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা।’

বৃহস্পতিবার আইফোনটি ফেরত পাওয়ার পর আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন ব্যবসায়ী দারমস ওমর। তিনি জানান, এর আগেও হংকংয়ে একটি মোবাইল ফোন হারিয়েছিল তার। কিন্তু সেখানকার পুলিশ তা উদ্ধার করতে পারেনি।

দারমস ওমর জানান, বাংলাদেশের পুলিশ তার আইফোনটি উদ্ধার করতে পারবে তা প্রথমে তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। মোবাইল ফোন হাতে পেয়ে তিনি বাংলাদেশের পুলিশকে উন্নত দেশের পুলিশের সঙ্গে তুলনা করেন।

তিনি বলেন, 'হংকং পুলিশ যা পারেনি তা আপনাদের সাইবার পুলিশ পেরেছে'।