রামেক হাপাতালে মান্দার যুবকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০১৯ ১২:০৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৭৩ বার।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনোয়ার হোসেন (২০) নামে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহত আনোয়ার হোসেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তবে হাসপাতালে ভর্তির সময় তার নাম দেয়া হয়েছে অমিত (২০)। পিতার নাম করিম। গ্রাম ও উপজেলার নাম সঠিক লেখা ছিল।


রাজশাহীর রাজপাড়া থানা পুলিশ সুত্র জানায়, রোববার রাতে রামেক হাসপাতালে মারা যাওয়া ওই যুবকের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু কোথায় কিভাবে আনোয়ার আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


এদিকে সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত আনোয়ারের লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। একইদিন বিকেলে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। নিহত যুবক আনোয়ার হোসেন পুলিশের তালিকাভূক্ত ছাত্রশিবিরের ক্যাডার বলে নিশ্চিত করেছে গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা।
রাজশাহীর রাজপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মহিদুল ইসলাম জানান, ‘রোববার সন্ধ্যার আগে কে বা কারা ওই যুবককে নগরের লক্ষ্মিপুর সিডিএম হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। তবে হাসপাতালে ভর্তি ও আইসিইউ এর ভাড়ার টাকা কেউ না দেয়ায় তাকে সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাতেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আনোয়ার।’


ওসি তদন্ত আরও বলেন, ‘রাতেই পরিবারের সদস্যরা লাশ নিতে হাসপাতালে আসেন। তারা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নিতে চান। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় ময়নাতদন্তের আগে লাশ দেয়া হয়নি। সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার বুকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতসহ শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওযা যাবে।’


এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, রোববার দুপুরে মান্দা ফেরিঘাট থেকে একটি মোটরসাইকেল যোগে আনোয়ারসহ তিনজনকে রাজশাহীমুখি যেতে দেখেছে অনেকেই। অপর দুইজনের মধ্যে একজন শিবির ক্যাডার ও অন্যজন অপরিচিত। তবে, আনোয়ারের মৃত্যুর বিষয়ে তার পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে রাজি হননি।


মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘মান্দা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জাল হোসেন তোফা লাশ নিতে রাজশাহী যাওয়ার আগে আমাকে জানিয়ে ছিলেন। পরে এ বিষয়ে তিনি আর কিছুই জানাননি। তবে আনোয়ার ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল তা শুনেছি।’
ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন তোফা জানান, ‘নিহত আনোয়ারের পরিবারের সদস্যদের পিড়াপিড়িতে লাশ নেয়ার জন্য আমি রামেক হাসপাতালে গিয়েছিলাম। তবে কিভাবে আনোয়ার মারা গেছে এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’ 


স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, রাজশাহী নগরের নওদাপাড়া এলাকায় গণপিটুনির শিকার হন আনোয়ার হোসেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অপর দুইজন পালিয়ে যায়। তবে কি কারণে পিটুনির শিকার হয়েছেন তা জানাতে পারেনি সূত্রটি।