বগুড়ায় স্কুল মাদ্রাসা ও ভূমি অফিসে পরিদর্শনে গিয়ে যা দেখলেন ইউএনও

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০১৯ ১২:৫৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৯৯ বার।

বগুড়ায় শহরের বাইরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি দপ্তরগুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময়-সূচীর পরিবর্তে নিজেদের সুবিধামত সময়ে আসা-যাওয়া করছেন। বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুর রহমানের আকস্মিক পরিদর্শনে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। তিনি ৩১ মার্চ রোববার বগুড়া সদর উপজেলার ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি দাখিল মাদ্রাসা, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও একটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শন করেন। 
দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ ইউএনও আজিজুর রহমান ওই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন শেষে দুপুর ১২ টা ১৩ মিনিটে Uno Bogura Sadar নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘আমরা কতটা আরামপ্রিয় ও কৌশুলী!’ শিরোনামে একটি লেখা পোস্ট করেন। সঙ্গে তিনি পরিদর্শন করা স্কুল, মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক ও ভূমি অফিসের ১০টি ছবিও আপলোড করেন। যোগাযোগ করা হলে ইউএনও আজিজুর রহমান বলেন, ‘এসব অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে অবহিত করার জন্য ওই দপ্তরগুলোর প্রধানদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
ফেসবুক পোস্টে ইউএনও আজিজুর রহমান যা উল্লেখ করেছেন তার সারাংশ হলো- অনেক শিক্ষকই নির্ধারিত সময়ের পরে স্কুলে যাচ্ছেন। তাদের কেউ কেউ তারিখবিহীন ছুটির আবেদন দিয়ে অনুপস্থিত থাকছেন। আবার আবেদন না করেও অনুপস্থিত থাকছেন। সরকারি অন্য দপ্তরগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিকে পৌণে ১১টাতেও পরিচ্ছন্নতা কর্মী ছাড়া আর কারও দেখা মেলে না। একই অবস্থা ইউনিয়ন পর্যায়ের ভূমি অফিসেও। সকাল ১০টার পরেও অফিস প্রধানের চেয়ার শূণ্য থাকে। 


ফেসবুকে লেখা বগুড়া সদরের ইউএনও আজিজুর রহমানের সেই পোস্টটি হবহু তুলে ধরা হলো- ‘আমরা কতটা আরামপ্রিয় ও কৌশুলী! আজ ৩১/০৩/২০১৯ খ্রি. সকাল থেকে ৬ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি দাখিল মাদ্রাসা একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও একটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস আকস্মিক পরিদর্শন করা হয়। পর্যবেক্ষণঃ সকাল ৯.৩৫ টায় একটি স্কুলে লাল গাড়ি ও ইউএনও কে দেখতে পেয়ে ৩ জন শিক্ষক তড়িঘড়ি করে ক্লাসে ঢুকে পড়েন। ১০.৪৫ টায় কমিউনিটি ক্লিনিকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ব্যতীত কাউকে পাওয়া গেলনা। একটি স্কুলে একজন শিক্ষককে অনুপস্থিত/সি এল দেখে তার শুধু স্বাক্ষরযুক্ত আবেদন পাওয়া গেল কিন্তু কত তারিখে ছুটি বা কত তারিখে আবেদন করেছেন তা কিছুই উল্লেখ নেই। মনে হল একটু সময় পেলে তারিখটা বসায়ে আমাকে দেখাতেন। একটি মাদ্রাসায় একজন শিক্ষক গত ২ ও ৩ তারিখ অনুপস্থিত/সি এল এ ছিলেন কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন দরখাস্ত জমা দেননি। সকাল ১০.০৫ টায় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নেই।’
ফেসবুকে ইউএনও’র পোস্ট করা ছবি থেকে বারপুর কমিউনিটি ক্লিনিক এবং নুনগোলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নির্ধারিত সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি জানা গেলেও বাকি দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম জানা যায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া সদরের ইউএনও আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমি নামগুলো স্পেসিফিক করতে চাচ্ছি না। কারণ এ বিষয়ে এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। যেমন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, মাদ্রাসার বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বিষয়ে এসি ল্যান্ডকে অবহিত করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে তারা কি ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে সেটিও জানাতে বলা হয়েছে।’