ফরম ফিলআপ ছাড়াই বগুড়ায় ১৫১জনের নামে এলো এইচএসসি’র প্রবেশপত্র!

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:১৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৪১ বার।

ফরম ফিলআপ করেনি অথচ বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য পাঠানো হয়েছে প্রবেশপত্র। একটি দু’টি নয় বগুড়ার দুই সরকারি কলেজের ১৫১জন কথিত পরীক্ষার্থীর নামে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়েছে। সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজের কথিত শিক্ষার্থী রয়েছে ৮১জন আর বাদবাকি ৭১জন সরকারি আজিজুল হক কলেজের। তবে প্রকৃত পরীক্ষার্থী না হওয়ায় ওই দুই কলেজের পক্ষ থেকে প্রবেশপত্রগুলো যথারীতি বোর্ডে ফেরত পাঠানো হয়েছে। 
উভয় কলেজ কর্তৃপক্ষের ধারণা, শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভুলের কারণেই পরীক্ষার্থী না হওয়া সত্ত্বেও কথিত শিক্ষার্থীদের নামে এভাবে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়েছে। অবশ্য রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিষয়টি তারা যাচাই-বাছাই করে দেখছেন। সেই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে কোন কিছুই বলা সম্ভব নয়।
বগুড়া সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় ১ হাজার ৪০০ আসনের বিপরীতে ১ হাজার ৭২২জন ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ওই কলেজ থেকে ১ হাজার ৭০৪জন শিক্ষার্থী ফরম ফিলআপ করে। কিন্তু রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে ১ হাজার ৭৮৫জনের প্রবেশপত্র পাঠানো হয়। একইভাবে সরকারি আজিজুল হক  কলেজে ১ হাজার ৪০০ আসনের বিপরীতে ১ হাজার ৫৬৭ শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। কিন্তু ড্রপআউট এবং ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে অন্য কলেজে চলে যাওয়ার কারণে সেখানে এবার ফরম ফিলাপ করে ১ হাজার ৫৩৭ শিক্ষার্থী। তবে প্রবেশপত্র পাঠানো হয় ১ হাজার ৬০৮জনের নামে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহ্ সুলতান কলেজে বাড়তি যে ৮১জনের নামে প্রবেশপত্র পাঠানো হয়েছে তাদের কেউ কেউ ওই কলেজের ছাত্র হলেও ফরম ফিলআপ করেনি। আবার অনেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে অন্য কলেজেও চলে গেছে অর্থাৎ তারা আর ওই কলেজের শিক্ষার্থীই নয়। অন্যদিকে সরকারি আজিজুল হক কলেজে বাড়তি যে ৭১জনের নামে প্রবেশপত্র পাঠানো হয়েছে বর্তমানে তাদের কারও ছাত্রত্ব নেই। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই যে ৭১জনের নামে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়েছে তাদের মধ্যে চার বছর আগের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রদের নামও রয়েছে। 
সরকারি শাহ্্ সুলতান কলেজ থেকে ফরম ফিলআপ না করলেও যাদের নামে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়েছে তাদের একজন রাকিবুল হাসান জানিয়েছে, পারিবারিক কিছু সমস্যার কারণে এবার সে পরীক্ষা দেবে না বলে ফরম ফিলআপ করেনি। অন্যদিকে মেহেদী হাসান নামে অপর একজন জানিয়েছে, সে অনেক আগেই ওই কলেজ থেকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে অন্য কলেজে ভর্তি হয়েছে।
সরকারি শাহ্্ সুলতান কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ এজাজুল হক জানিয়েছেন, বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভুলের কারণেই এমনটি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা অতিরিক্ত প্রবেশপত্রগুলো গত ৩০ মার্চ রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে ফেরত পাঠিয়েছি।’ সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শাজাহান আলীও একই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ভুল করে পাঠানো ৭১টি প্রবেশপত্র আমরা বোর্ডে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছি।’
ফরম ফিলআপ না করার পরেও কিভাবে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হলো-এমন প্রশ্নের সরাসরি কোন জবাব দিতে পারেন নি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনোয়ারুল ইসলাম। সাংবাদিকদের তিনি জানান, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।