নওগাঁর মান্দায় দরপত্র ছাড়াই সরকারি রাস্তার গাছ কেটে সাবাড়

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:২৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৬৬ বার।

নওগাঁর মান্দায় দরপত্র ছাড়াই সরকারি রাস্তার ফলজ গাছ কেটে সাবাড় করছে সামাজিক বনায়ন কমিটির কতিপয় প্রভাবশালী সদস্য। রাস্তা সম্প্রসারণ কাজের অজুহাতে ব্যক্তি মালিকানার এসব গাছ কেটে নেয়া হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। গত এক সপ্তাহ ধরে এসব গাছ কেটে নেয়া হলেও নিরব ভুমিকা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন।

 
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার হাসপাতাল মোড় হতে বুড়িদহ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তায় বনবিভাগ বিভিন্ন প্রজাতির বনজ গাছ রোপণ করে। রাস্তা সম্প্রসারণ কাজের জন্য এ রাস্তার জ্বালানী কাঠের গাছগুলো দরপত্রের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয় বনবিভাগ। কিন্তু রাস্তার দুইধারে রোপিত ব্যক্তি মালিকানার আম ও কাঁঠাল গাছগুলো বনবিভাগ ডাক দেয়নি বলেও জানান তারা। 


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ, বনবিভাগের ডাকের বাইরে থাকা গাছগুলোতে হঠাৎ করেই নাম্বারিং শুরু করে ঠিকাদার ওয়াজেদ আলীর লোকজন। গত এক সপ্তাহ ধরে ঠিকাদার লোক দিয়ে ডাকের বনজ (জ্বালানী কাঠ) গাছের সঙ্গে ফলজ গাছগুলো কেটে সাবাড় করছে। আর এ কাজে ঠিকাদারকে সহায়তা করছে সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী কমিটির প্রভাবশালী সভাপতি ফজলুর রহমান, সেক্রেটারি প্রদীপ মহন্ত ও সদস্য ভগীরত তাঁতি। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজস করে মোটা অংকের বিনিময়ে এসব গাছ কেটে নিচ্ছেন তারা। 


উপজেলা বনবিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে হাসপাতাল মোড় হতে বুড়িদহ পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন প্রজাতির জ্বালানী কাঠের ৬ হাজার গাছ রোপণ করে বনবিভাগ। এর মধ্যে কিছু চারা গাছ নষ্ট হয়ে যায়। অবশিষ্ট ৪ হাজার ৮শ গাছ রাস্তা সম্প্রসারণ কাজের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। সুত্রটি আরও জানায়, ওই রাস্তার দুইধারে রোপণকৃত বেশকিছু আম-কাঁঠালের গাছ রয়েছে। ফলজ গাছগুলো পুরাতন ও ব্যক্তি মালিকানার হওয়ায় তা ডাক দেয়া হয়নি। 


উপজেলা বন কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে বনবিভাগ চুক্তিবদ্ধ হবার পর ওই রাস্তায় বনায়ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। চুক্তি মোতাবেক পাউবো ২০%, বনবিভাগ ১০%, সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী কমিটি ৬৫% ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ৫% হিস্যা লাভ করবে। 
বন কর্মকর্তা আরও বলেন, হাসপাতাল মোড় হতে বুড়িদহ পর্যন্ত রাস্তায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কোন ফলজ গাছ রোপণ করা হয়নি। রাস্তার দুইধারের ফলজ গাছগুলো পুরাতন ও ব্যক্তি মালিকানার হওয়ায় সেগুলো টেন্ডারের বাইরে ছিল। কিন্তু সামাজিক বনায়ন কমিটি কিভাবে গাছগুলো কেটে নিচ্ছেন এটি আমি বলতে পারছি না।


সামাজিক বনায়ন কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাস্তার দু’পাশে ব্যক্তি মালিকানার কোন গাছ নেই। সরকারী নীতিমালা মেনেই গাছ কাটা হচ্ছে।


তবে, ঠিকাদার ওয়াজেদ আলী মোবাইলফোন রিসিভ না করায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দ্রুত খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।