নওগাঁর মান্দায় কয়েকটি বাড়ির নলকুপ দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছে

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:৩৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২১১ বার।

নওগাঁর মান্দা উপজেলার বনকুড়া গ্রামের বেশ কিছু বাড়ির নলকূপ দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছে। অনেকেই সেই গ্যাস দিয়ে রান্নার কাজও করছে। এলাকাবাসীর ধারনা ওই গ্রামে গ্যাসের খনির সন্ধান মিলতে পারে। জানা গেছে গত এক সপ্তাহ আগে গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের বাড়িতে স্থাপনকৃত নলকূপ মেরামত করতে গিয়ে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। পর্যায়ক্রমে গ্রামের মোজাম্মেল হকের বাড়ি, আব্দুল জব্বারের বাড়িসহ অনেকের নলকূপে গ্যাসের অস্তিত্ব মিলেছে। গ্রামের অন্য নলকূপগুলোতেও পানির পরিবর্তে বের হচ্ছে গ্যাস। গ্যাস বের হওয়ায় কৃষি জমিতে সেচ দেয়ার জন্য স্থাপিত একটি গভীর নলকূপ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা। 
স্থানীয়দের দাবি, এক সপ্তাহ আগে বনকুড়া গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের বাড়ির নলকূপের পাইপে গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তাতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। গ্যাসের সেই আগুনে রান্নার কাজও করে দেখেছেন তারা। আগুনের লেলিহান শিখা ও উত্তাপ দেখে তারা হতবাক। সংবাদটি ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের এলাকাসহ সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

 
দৃশ্যটি একনজর দেখতে প্রতিদিন সববয়সী নারী-পুরুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন উপজেলার বনকুড়া গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের বাড়িসহ আশপাশের বাড়িগুলোতে। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মুশফিকুর রহমান ও এসিল্যান্ড এসএম হাবিবুল হাসান। 
বাড়ির মালিক ময়েজ উদ্দিন প্রামানিক জানান, আমার বাড়ির ভেতরে স্থাপনকৃত নলকূপে কয়েকদিন ধরে পানি উঠছিল না। নলকূপটি মেরামতের জন্য মেকানিক নিয়ে আসি। নলকূপের পাইপ তুলে জোড়া খোলার জন্য আগুন ধরিয়ে দিয়ে পাইপের মুখে আগুন ধরে যায়। পরে সেই আগুনে স্থানীয়রা পরীক্ষামুলকভাবে রান্নার কাজ করে দেখেছে।


গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার জানান, ২০১৩ সালে নভেম্বর মাসে গ্রাম থেকে ২শ ফুট উত্তরে একটি কৃষি জমিতে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। সেসময় প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বাপেক্স কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। এরপর তাদের আর কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। তিনি আরও বলেন, প্রায় ৬ বছর পর গ্রামের নলকুপগুলোতে আবারও গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেল। 


গ্রামের মোজাম্মেল হক, ইয়াকুব আলী, তয়েজ উদ্দিনসহ আরও অনেকে জানান, গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের বাড়ির পর একে একে অনেকের বাড়ির নলকূপে গ্যার বের হতে শুরু করেছে। পরীক্ষার মাধ্যমে অবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসিদের আস্বস্ত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা। 
ইউএনও খন্দাকার মুশফিকুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দুর্ঘটনা এড়াতে নলকূপের পাইপের গ্যাসে আগুন না জ্বালানো জন্য গ্রামের লোকজনকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি ভূ-তাত্বিক জরিপ অধিদপ্তর ও বাপেক্স কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানানো হবে।
নওগাঁর সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো.মিজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন কারণে ভূ-অভ্যন্তরের অগভীরে কয়লা ও মিথেন গ্যাসের অস্তিত্ব থাকতে পারে। সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে মান্দার বনকুড়া গ্রামের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।