ঝড়-বৃষ্টি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেই নেসকোর

শেরপুরে আকাশে মেঘের গর্জনেই বিদ্যুৎ চলে যায়

শেরপুর উপজেলা (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০১৯ ১২:১১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৩৭ বার।

বগুড়ার শেরপুরে ঝড়-বৃষ্টি মোকাবেলায় কোন প্রস্তুতি নেই নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো)। পুরানো ও ঝুঁকিপূর্ণ সরবরাহ লাইন মেরামত ও সংস্কার না করায় আকাশে মেঘের গর্জন শুনলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ‘লাইন ফল্ট’, ‘ট্রান্সফরমার বিকল’, ‘তার ছিঁড়ে গেছে’, ‘খুঁটি ভেঙে পড়েছে’- এসব অজুহাতে দিনে-রাতের ১৫ থেকে কুড়ি বার বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলছে। কোন কোন এলাকায় তো ঘন্টার পর ঘন্টা বিুদ্যৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলার ৩৫ হাজার গ্রাহককে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এইচসএসসি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরও বেশি। বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা-যাওয়ার কারণে তারা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছে না।  

নেসকোর হিসাব অনুযায়ী, শেরপুরে তাদের ৩৫ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৯২ ভাগই আবাসিক অর্থাৎ বসত-বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। মোট পাঁচটি ফিডারের মাধ্যমে ওই উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। ফিডারগুলো থেকে বিদ্যুৎ সবরাহের জন্য স্থাপন করা সঞ্চালন লাইনগুলোর অধিকাংশই পুরানো ও ঝুঁকিপুর্ণ। বিশেষ করে মির্জাপুর ও সাধুবাড়ী ফিডারের অবস্থা বেশ করুণ। প্রায় প্রতিদিনই ওই দু’টি ফিডারে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। এছাড়া বগুড়া গ্রিড থেকে শেরপুর সাব স্টেশন পর্যন্ত আসা ৩৩কেভির (কিলো ভোল্ট) ৫-৭ কিলোমিটার মেইন লাইনও দুর্বল রয়েছে। 
উপজেলা সদরে আকবর আলী নামে এক গ্রাহক জানান, মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরের দিকে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু এরপর থেকেই গোটা উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ। বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দেয়া হলে বলা হয়, ‘৩৩ কেভি লাইন ফল্ট হয়েছে। যার কারণে বিদ্যুৎ নেই।’ পরে দীর্ঘ সময় পর মেরামত কাজ শেষে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। তার আগে সোমবার রাতে হালতা বাতাসের পরপরই হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। ঘন্টা দুই-তিনেক পর পৌর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হলেও উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ বন্ধ ছিল। 
সাধুবাড়ী কল্পনা সেমি অটো রাইচ মিলের সত্বাধিকারী আশরাফ আলী জানায়, বেশকিছুদিন ধরে বিদ্যুৎ বিপর্যয় মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। লোডশেডিং না থাকলেও বিদ্যুৎ গেলে তিন-চার ঘন্টায় আসে না। ‘লাইন ফল্ট’, ‘ট্রান্সফরমার বিকল’, ‘তার ছিঁড়ে গেছে’, ‘খুঁটি ভেঙে পড়েছে’- এসব অজুহাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। এতে করে মিল-কারখানায় উৎপাদন ব্যহৃত হওয়ার পাশাপাশি বাসা-বাড়িতে পানির সংকট দেখা দেয়। ফলে রান্না-বান্নাসহ অন্যান্য কাজে তাদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া রাতের বেলায় বিদ্যুৎ না থাকায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা নির্বিঘেœ পড়ালেখা করতে পারছেন না। ফলে তাদের প্রস্তুতিও ভাল হচ্ছে না।
তবে নেসকোর শেরপুর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদুল হাসান বলছেন, ঝড়-বৃষ্টি হলে বিদ্যুতের লাইনে সমস্যা হয়। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে মেরামত করতে একটু সময় লাগে। এছাড়া ট্রান্সফরমারের ক্রটির কারণেও বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এসবক্ষেত্রে আমাদের কি করার আছে?’