ধুনটে স্কুল মাঠে মেলা ভেঙ্গে দিয়েছে প্রশাসন

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ১১:৫৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৯৮ বার।

বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ছালেহা-জহুরা উচ্চ বিদ্যালয় ও ভান্ডারবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অবৈধ মেলা ভেঙ্গে দিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে পাঠদান বন্ধ করে দু’টি বিদ্যালয়ের মাঠে মেলা বসানোর অভিযোগ রয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার দুপুর ২টায় মেলাটি ভেঙ্গে দেয় ধুনট উপজেলা প্রশাসন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর চৈত্র মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের ভূতবাড়ী গ্রামে বান্নির মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলাটি মসলা ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য বিখ্যাত। ভূতবাড়ী গ্রামে মেলার জায়গা না হওয়ায় দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত ভান্ডারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মেলা বসে। চলতি বছর মেলাটি পরিচালনা করার জন্য ১০৭ সদস্যে একটি কমিটি করে স্থানীয় লোকজন। ওই কমিটির সভাপতি ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল এবং সাধারণ সম্পাদক ইউনিয়ন আ.লীগের সহসভাপতি আব্দুল বারিক। তবে প্রকৃত পক্ষে মেলার নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এ বছর মেলাটি তিনদিন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত সোমবার থেকে ভান্ডারবাড়ী সালেহা-জহুরা উচ্চ বিদ্যালয় এবং ভান্ডারবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মেলার হরেক রকমের দোকান বসে। দোকানে বেচাকেনা চলে। দোকান গুলোতে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সি মানুষের সমাগম ঘটে। এদিকে স্থানীয় ওই মেলা বসাতে গিয়ে বিদ্যালয় দু’টির পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার দুপুর ২টায় ধুনট উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানার নেতৃত্বে পুলিশ মেলাটি ভেঙ্গে দেয়। অল্পসময়ের মধ্যে মেলার দোকানীরা পণ্যগুছিয়ে বিদ্যালয় মাঠ ছেড়ে দেন। 

ভান্ডারবাড়ী সালেহা-জহুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জানান, বিদ্যালয় মাঠ ব্যবহার করে মেলা বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্যালয় মাঠে মেলা বসিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেলার কারনে বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়নি। তবে স্থানীয় মেলা হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে না। মেলার বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছিল।

মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারিক বলেন, ভান্ডারবাড়ীর বান্নি মেলা শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা। প্রতি বছর চৈত্র মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার মেলাটি হয়। একদিনের এ মেলা উপলক্ষ্যে স্থানীয় মানুষের মাঝে চরম আনন্দ বিরাজ করে। প্রকৃতপক্ষে মেলাটি একদিনের হলেও মেলায় আগত দোকানীরা দু’একদিন আগে থেকে দোকান এনে কেনাবেচা শুরু করে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেলার জন্য বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখার কোন নির্দেশ দেওয়া হয়নি।

ধুনট উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা জানান, ভান্ডারবাড়ী সালেহা জহুরা উচ্চ বিদ্যালয় ও ভান্ডারবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ দখল করে অবৈধ ভাবে মেলা বসানো হয়েছিল। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলাটি ভেঙ্গে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হয়েছে।