নুসরাতকে বাঁচানো গেল না

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:১৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২২৭ বার।

মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে চলেই গেলেন ফেনীর সোনাগাজীর অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।খবর সমকাল অনলাইন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতকে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। 

হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, রাতে নুসরাতের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। 

শারীরিক অবস্থার একটু উন্নতি হলেই নুসরাতকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন চিকিৎসকরা। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্রও সিঙ্গাপুরে চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল বুধবারই। তবে সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে গেল চিকিৎসকদের। ফেরানো গেল না তাকে।

গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে ৪/৫ জন বোরকা পরা ব্যক্তি ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়।

পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।

পরদিন তার চিকিৎসায় ৯ সদস্যের বোর্ড গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রীর ওপর এমন নির্মমতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সার্বিক চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন। পাশাপাশি জড়িতদের গ্রেফতারেরও নির্দেশ দেন।

ঢামেক বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রাফিকে মঙ্গলবার লাইফ সাপোর্টে রেখেই অস্ত্রোপচার করা হয়। সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলে এই অস্ত্রোপচার। পরে চিকিৎসকরা জানান, রাফির ফুসফুসকে কার্যকর করতে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের পরামর্শে এই অস্ত্রোপচার করা হয়।

সোমবার নুসরাত জাহান রাফি ‘ডাইং ডিক্লারেশন’ (মৃত্যুশয্যায় দেওয়া বক্তব্য) দেন। নুসরাত তার বক্তব্যে বলেছেন, ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে তার শরীরে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে ওড়না পুড়ে গেলে তার হাত মুক্ত হয়। বোরকা, নেকাব ও হাতমোজা পরা যে চার নারী তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন, তাদের একজনের নাম সম্পা বলে জানান নুসরাত।