বগুড়ার শেরপুর শহীদিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:৩৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৪১ বার।

বগুড়ার শেরপুর শহীদিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা বাণিজ্য, ফরম পুরণে অতিরিক্ত টাকা নেয়া, পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা দেয়ার নামে বাড়তি টাকা আদায়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শুক্রবার বিকেলে শেরপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন একই প্রতিষ্ঠানের এক সহকারি নারী শিক্ষক আঞ্জুমান আরা খাতুন। এদিকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান বলেন, 'তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।'

 

শহরের স্থানীয় বাসষ্ট্যান্ডস্থ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বামী ফারুক হোসেনসহ তার পক্ষের একাধিক ব্যক্তির উপস্থিতিতে লিখিত বক্তৃতায় তিনি বলেন, 'বিগত ২০০৩সালে সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে শেরপুর শহীদিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রসায় যোগদান করি। পরবর্তীতে এমপিওভুক্ত হয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পাঠদানসহ প্রতিষ্ঠানের সব দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম। কিন্তু প্রায় দশ বছর পরে (বিগত ২০১৩সাল) একটি ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভুয়া তদন্ত কমিটি গঠন করে আমাকে প্রথমে সাময়িক এবং পরবর্তীতে তদন্ত কমিটির মিথ্যা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বরখাস্ত করেন। সম্পুর্ণ অন্যায় ও অবৈধভাবে সহকারি শিক্ষক (ইনডেক্স নং-২০০১৯৮০) পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় তার বেতনভাতা বন্ধ করা হয়। অধ্যক্ষের আক্রোশের শিকার তিনি। তাই অবৈধ বরখাস্ত আদেশের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার প্রার্থনা কওে ১নং জেলা যুগ্ম জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং-২৭১-১৩। তার পদ শুন্য ঘোষণা না করতে এবং নতুনভাবে কাউকে নিয়োগ না দিতে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। অথচ আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা আদেশ উপেক্ষা করে গোপনে তার পদ শুন্য ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে তার সহকারি শিক্ষকসহ দুইটি পদে নিয়োগ দেন। এতে বিশ লক্ষাধিক টাকার বাণিজ্য করা হয়েছে।'
 

এছাড়াও অধ্যক্ষ মাওলানা হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পাওয়া গেছে আরও চমকপ্রদ তথ্য। চলতি আলিম পরীক্ষায় শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা অমান্য করে ফরম পুরণে ১৩শ’ টাকার স্থলে ২৫০০-৩৫০০টাকা আদায় করেছেন। এমনকি পরীক্ষার পূর্ব মুহুর্তে কোন প্রকার রশিদ ছাড়াই পরীক্ষায় বিশেষ সুবিধা দেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৪১০-৪৫০টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন। পাশাপাশি সব মহলকে চোখে ধুলা দিয়ে অভিনব কায়দায় পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল চালাচ্ছেন। এছাড়া অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমানের ছেলে পরীক্ষার্থী হওয়ায় নামমাত্র অন্যকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব দিয়ে কেন্দ্রে বসেই বহাল তবিয়তে এসব অপকর্ম করে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।

 

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শেরপুর শহীদিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, সংবাদ সম্মেলনে কি অভিযোগ করা হয়েছে আমি জানি না। যথাযথ নিয়ম মেনেই ওই দুইটি পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আঞ্জুমা আরার জন্য সহকারি শিক্ষক সমাজ বিজ্ঞান পদটিই এখন শুন্য রয়েছে। তাই আদালতের আদেশ উপেক্ষা করা হয়নি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তাও সঠিক নয় বলে দাবি করেন এই অধ্যক্ষ মাওলানা হাফিজুর রহমান।