নুসরাতের সোনাগাজীতে নিরানন্দ বৈশাখ
পুন্ড্রকথা ডেস্ক
গ্রামের মানুষের কাছে এ দিনের চিত্রটা বছরের অন্যসব দিনের চেয়ে আলাদা। বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ বলে কথা৷ সকালে ঘুম থেকে উঠে পান্তা ইলিশ খাওয়া, মেলায় যাওয়া কিংবা আরও কত আয়োজন। গান-বাজনা আর নানা উৎসবে মেতে ওঠেন সবাই। তবে ফেনীর সোনাগাজীতে এবার নেই এমন কোনও আনন্দ বা উৎসব।
রোববার পহেলা বৈশাখের দিনে এখানে নেই কোনও উৎসব। সকালে হয়নি শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পান্তা ইলিশের আয়োজন। সোনাগাজী উপজেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোথাও কোনো উৎসব চোখে পড়েনি।
সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে। বর্বর এই ঘটনার পর থেকে শোকাচ্ছন্ন পুরো সোনাগাজী। শোকের ছায়া কাটেনি পহেলা বৈশাখেও। বৈশাখ মানে এখানে বেদনা, কোথাও নেই আলপনা- শুধুই এক রাশ বিষণ্নতার কালি।
নজরুল একাডেমি সোনাগাজীর সভাপতি মো. নুরুল আমিন পলাশ সমকালকে বলেন, 'নুসরাতে নির্মম হত্যাকাণ্ডে সরাদেশ শোকাহত, কিন্তু সোনাগাজীর মানুষের শোকটা একটু বেশি।এত বেশি আহত হয়েছি, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।'
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে প্রতি বছর নজরুল একাডিমের কিছু আয়েজন থেকে। এবারও সকাল ৯টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। কিন্তু নুসরাতের মত্যু যন্ত্রণা সংস্কৃতিকর্মীদের ছুঁয়ে গেছে। ফলে আমরা আমাদের সব অনুষ্ঠান স্থগিত করেছি। উপজেলা চত্বরে পূর্ব নির্ধারিত দুই দিনের বৈশাখী মেলাও স্থগিত করা হয়েছে বলে জানান পলাশ।
তিনি বলেন, নুসরাতে মৃত্যু যেন তীব্র বিদ্রুপ করছে। তার নাম এখন শুধু আর নুসরাত বা রাফি নয়। প্রতিদিন নির্যাতন ও হত্যার শিকার আরও অনেক অনেক মেয়ের নাম এখন তারও নাম।
এবার উপজেলা প্রশাসন থেকেও পহেলা বৈশাখের কোনও আয়োজন ছিল না সোনাগাজীতে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল পারভেজ সমকালকে বলেন, অন্যান্যবার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শোভাযাত্রা, উপজেলা চত্ত্বরে পান্তা ইলিশ, মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবার নুসরাতের স্মরণে উৎসব আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে। খবর সমকাল অনলাইন।