প্রথম দিনেই হাজারো মানুষের ঢল

বগুড়ায় বৈশাখী মেলার মূল আকর্ষণ পুতুল নাচ ও দুই মাথার গরু

মিষ্টি রহমান
প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ১৪:০৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩২৯ বার।

বগুড়ায় হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে পৌর পার্কের বৈশাখী মেলায়। রোববার সকালে উদ্বোধনের পর তেমন ভিড় না থাকলেও বিকেলে উৎসব প্রিয় মানুষের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করে। তরুণ-তরণীদের ভিড়ই বেশি ছিল। তবে শিশু-কিশোর এবং মধ্য বয়স্ক ও বৃদ্ধ নারী-পুরুষকেও মেলা প্রাঙ্গণে ঘুরতে দেখা গেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ছোটরা ছুটছে নাগর দোলাসহ নানা খেলনা সামগ্রীর দোকানে। আর তরুণ-তরুণীরা ছুটছেন রঙ-তুলি দিয়ে নিজেদের কপোল রাঙাতে। ‘শুভ নববর্ষ’ কিংবা ‘পহেলা বৈশাখ’ লেখাগুলো নিজেদের হাতেও আঁকিয়ে নিচ্ছেন তারা। 
তবে প্রথম দিন মেলার সবচেয়ে আকর্ষণ ছিল পুতুল নাচকে ঘিরে। উডবার্ণ পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনের ভেতরে ২০ টাকা দর্শনীর বিনিময়ে পুতুল নাচ দেখানো হচ্ছে। এর পাশেই কাপড় দিয়ে ঘেরা একটি স্থানে দেখানো হচ্ছে দুই মাথা, তিন চোখ ও চার শিং-য়ের গরু। তবে বিরল সেই গরু দেখতে হলে ১০ টাকা করে গুণতে হবে। স্বপরিবারে যারা এসেছেন তারা মেলা ঘুরে ফেরার পথে বসছেন কোন খাবার দোকানে।
বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে বগুড়া থিয়েটারের উদ্যোগে প্রতি বছরের মত এবারও শহরের পৌর পার্কে শুরু হয়েছে বৈশাখী মেলা। ১৩৮৮ বঙ্গাব্দে  (১৯৮১ খ্রীস্টাব্দ) প্রথম শুরু হওয়া মেলাটি ইতিপূর্বে ৫দিন ধরে চললেও এবার  মেয়াদ একদিন বাড়িয়ে ৬দিন করা হয়েছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন, মেলা প্রাঙ্গণে এবার ছোট-বড় ৪১টি স্টল বসেছে। এছাড়া মেলার ভেতরে-বাইরে খেলনা সামগ্রী, জুয়েলারি ও খাবারের আরও অর্ধশত দোকান বসেছে। রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্বোধনের পর পরই লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
মেলায় আসা শেরপুরের তরুণী সীমা আক্তার জানান, তিনি প্রতি বছরই পৌর পার্কের বৈশাখী মেলায় আসেন। গালে রঙ-তুলিতে ‘শুভ নববর্ষ’ লিখে নেওয়া সীমা বলেন, বলেন, ‘বাঙালি সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ এক সঙ্গে দেখা যায় বলেই এই মেলা আমাকে টানে।’ ধুনটের বাসিন্দা নেহা আকতার বলেন, বৈশাখী একটা উৎসব। এর একটা রঙ আছে। নিজেকে রাঙাতেই আমি আসি।
দুই মাথাওয়ালা গরু দেখতে আসা সারিয়াকান্দির পয়ত্রিশোর্ধ রবিউল ইসলাম জানান, এমন অস্বাভাবিক গরু তিনি আগে কখনো দেখেন নি। গরুটির বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছি হয়তো কৃত্রিমভাবে আরেকটি মাথা ও শিং লাগানো হয়েছে। কিন্তু আমি নিজে পরখ করে দেখেছি সত্যিই গরুটির দু’টি মাথা এবং চারটি শিং রয়েছে।’ বিরল ওই গরুর মালিক চাঁপাইনবাবগঞ্জের মঈন উদ্দিন জানান, গরুটি এর আগেও তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে মেলায় প্রদর্শন করেছেন। তিনি বলেন,‘২ বছর বয়সী ৪মণ ওজনের এই গরু এখন আমার রোজগারের একটা পথ খুলে দিয়েছে।’ আয়োজকরা জানান, সোমবার দ্বিতীয় দিন মেলা প্রাঙ্গণে পাতা খেলা অনুষ্ঠিত হবে।