বগুড়ায় বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শাহীন খুন

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:৩৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯১৪ বার।

বগুড়ায় বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন (৫৫) খুন হয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের নিশিন্দারা উপ-শহর বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তরা এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করে। নিহত মাহবুব আলম শাহীন বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি পেশায় একজন পরিবহন ব্যবসায়ী।
বিএনপি নেতা মাহবুব আলম শাহীনকে যে স্থানে হত্যা করা হয়েছে সেখান থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ধরমপুর এলাকাতেই তার বাড়ি। তিনি ওই এলাকার মৃত আনিছুর রহমান দুলার ছেলে। ময়না তদন্তের জন্য শাহীনের লাশ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের পর পরই পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তবে কি কারণে কারা তাকে হত্যা করেছে সে সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেননি। বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, তারা এখনও হত্যাকাণ্ডের কারণ জানতে পারেননি।
দলীয় নেতা খুন হওয়ার খবর পেয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী রাতেই শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ছুটে যান। সেখানে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীনের মত একজন সাহসী রাজনীতিকের হত্যাকাণ্ড এটাই প্রমাণ করে দেশে কোন আইন-শৃঙ্খলা নেই। তিনি বলেন, ‘শাহীনকে কেন খুন করা হবে? কি অপরাধ ছিল তার? আমরা খুনীদের গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। এজন্য প্রয়োজনে আমরা রাজপথে যেতেও দ্বিধা করবো না।’


বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান জানান, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন প্রাইভেট কার নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি উপ-শহর বাজারে দশ তলা ফ্ল্যাটের নিচে পৌঁছার পর গাড়ি থামান। এরপর ‘বিসমিল্লাহ চাল ঘর’ নামে একটি দোকানে চাল কেনার পর মোবাইল ফোনে টাকা তুলতে সড়কের অপর প্রান্তে ‘ফ্লেক্সির দোকান’-এ যান। সেখানেই দুর্বৃত্তরা তাকে ঘিরে ধরে এবং উপর্যপরি ছুরিকাঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।’ ওসি বদিউজ্জামান বলেন, ‘দুবৃত্তরা মাহবুব আলম শাহীনের বুকে ছুরিকাঘাত করে।’
ইব্রাহিম ইসলাম নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ছুরিকাঘাতে আহত মাহবুব আলম শাহীন পড়ে ছিলেন। পরে তিনিসহ অপর একজন তাকে উদ্ধার করে অটোরিকশায় তুলে শহরের নামাজগড় এলাকায় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। আব্দুল হান্নান নামে অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দুর্বৃত্তরা ৪জন ছিল। তাদের বয়স আনুমানিক ২৫/২৬ হতে পারে।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির সাব ইন্সপেক্টর আব্দুল আজিজ মণ্ডল জানান, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীনকে রোববার রাত ১১টা ২৫ মিনিটে মেডিকেলে আনা হয়। কিন্তু ততক্ষণে তিনি মারা গেছেন।’
হত্যাকা-ের খবর পেয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে খুনীদের পরিচয় সনাক্ত হওয়ার চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি ঘটনাস্থলের পাশে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নির্মিত দশতলা ভবনের নিরাপত্তায় লাগানো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, ‘আমরা এখনও পর্যন্ত জানতে পারিনি।’