বগুড়ায় সাড়া জাগিয়েছে ভ্রাম্যমাণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

অরূপ রতন শীল
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ০৬:৫৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩২৪ বার।

বগুড়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে ভ্রাম্যমাণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে বগুড়ায় শুরু হয়েছে ভ্রাম্যমাণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রদর্শনী। ২২ দিনব্যাপীর ওই  কর্মসূচীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। 

কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে (ভিএম)  শুরু হয় ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরের  প্রদর্শনী। 

ভ্রাম্যমাণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্মসূচীর আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ৪ মে পর্যন্ত বগুড়া্র ১২ টি উপজেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওই  প্রদর্শনী করা হবে। সেই সাথে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলির ওপর ২০ মিনিটের প্রামাণ্যচিত্রও দেখানো হচ্ছে। নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেলের ওই প্রামাণ্যচিত্রের নাম ‘বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাস।’ এছাড়া  মানবাধিকার ও শান্তি সম্পর্কিত কিছু লিফলেট ও স্থির চিত্রও প্রদর্শন করা হচ্ছে।

ভ্রাম্যমাণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রয়েছে  প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন দলিল ও স্মারক যা দেখে বর্তমান প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে স্বচ্ছ একটি ধারণা পাবে।

ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর দেখতে আসা ভিএম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া তাবাসসুম বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এতো কঠিন ছিল কিছু বিরল ছবির মাধ্যমে দেখলাম। আমাদের দেশ এতো সহজে স্বাধীন হয়নি। তাই আমাদের সবার উচিত  দেশকে ভালবাসা। 

সাজিদা জেবা নামের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জানায়, মুক্তিযুদ্ধে নারীদের কি কষ্ট আর নির্যাতন তা দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। আজ এই জাদুঘর ও প্রামাণ্য চিত্রের মাধ্যমে জানতে পারলাম নারীরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে এবং যোদ্ধাদের কিভাবে রান্না করে খাবারের যোগান দিয়েছেন।

ভ্রাম্যমাণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের শিক্ষা কর্মসূচির কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার সিংহ বলেন, ‘স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত। সারা দেশে আমাদের দুইটি ইউনিট এই কর্মসূচীর কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিমাসে দেশের দুইটি জেলায় আমাদের এই কর্মসূচী চলবে।'

তিনি আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধের  মৌখিক ইতিহাস সংরক্ষণে শিক্ষার্থীদের বাড়ির কাজ দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বাড়িতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ দেখেছেন, এমন কারও কাছ থেকে ঘটনাবলি শুনে রচনা লিখবে। যা আর্কাইভে সংরক্ষণ করে রাখা হবে এবং সেরা লেখাগুলো বই আকারে প্রকাশ পাবে।