ভর্তি জালিয়াতি: অভিযুক্ত ৯১ ঢাবি শিক্ষার্থীর তথ্য সিআইডিতে

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:১৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৩৩ বার।

ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, ডিজিটাল জালিয়াতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং ভর্তিতে সহায়তাকারী এমন ৯১ শিক্ষার্থীর তথ্য সিআইডির (পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত শাখা) কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর এক চিঠিতে এসব শিক্ষার্থীর বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয় সিআইডির পক্ষ থেকে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের তথ্য সিআইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়।খবর দেশ রুপান্তর

সিআইডির চাওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর পূর্ণাঙ্গ নাম, ঠিকানা, শিক্ষাবর্ষ, ইউনিট, বিষয়, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল, সেমিস্টারভিত্তিক পরীক্ষার ফলাফল এবং পুনঃ ভর্তির বিস্তারিত তথ্য।

সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাশের স্বাক্ষর করা ওই চিঠিতে বলা হয়, শাহবাগ থানায় ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর হওয়া ২৬ নম্বর মামলার সূত্রে এজাহারে নাম থাকা এবং তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রদত্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এবং গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তের স্বার্থে সংযুক্তি তালিকা-১ এ উল্লিখিত শিক্ষার্থীদের তথ্য পাওয়া একান্ত প্রয়োজন। ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁস ও ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগ ওঠার পর সিআইডি বাদী হয়ে মামলাটি করে।

এদিকে রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব বিভাগের শিক্ষার্থীদের তথ্য চাওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ১৩ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নয়জন, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের আটজন, অর্থনীতি বিভাগের পাঁচজন, মনোবিজ্ঞান বিভাগের পাঁচজন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চারজন, আইন বিভাগের চারজন, ইসলাম শিক্ষা বিভাগের চারজন, পদার্থবিদ্যা বিভাগের তিনজন, ফার্মেসি বিভাগের তিনজন, বাংলা বিভাগের তিনজন, বিশ্ব ধর্মতত্ত্ব এবং সংস্কৃতি বিভাগের তিনজন, ফলিত রসায়ন বিভাগের দুজন, ইতিহাস বিভাগের দুজন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দুজন, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের দুজন, ফিন্যান্স বিভাগের দুজন, মার্কেটিং বিভাগের দুজন, টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র বিভাগের দুজন, স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের দুজন, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের দুজন এবং সংস্কৃতি বিভাগের দুজন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ বৈকল্য, অ্যাকাউন্টিং, ইংলিশ ফর আদার ল্যাংগুয়েজ, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান এবং পালি বিভাগসহ আরও বেশ কিছু বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর তথ্যও চাওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এনামউজ্জামান বলেন, ‘আমাদের কাছে একটি চিঠি এসেছে। সেখানে সিআইডি ভর্তি জালিয়াতি সংক্রান্ত ঘটনায় কিছু শিক্ষার্থীর বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। আমরা সেগুলো সিআইডিকে দিয়েছি।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, সিআইডি যখন যে তথ্য চেয়েছে আমরা তাদের সহযোগিতা করছি। আমরা একটা টিম ওয়ার্কের মতো কাজ করছি। যখন তদন্ত শেষ হবে তখন নাম প্রকাশ করা হবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছর ধরে প্রিন্টিং প্রেস থেকে পরীক্ষার আগের রাতে এবং পরীক্ষার দিন কেন্দ্র থেকে একটি চক্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে আসছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে সিআইডি বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ভর্তি জালিয়াতদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছে।