যৌন কেলেঙ্কারির গ্যাঁড়াকলে ভারতের প্রধান বিচারপতি

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০১৯ ১২:৩২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৮০ বার।

এক নারীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর বিরুদ্ধে।

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের এক প্রাক্তন নারী কর্মীর এ অভিযোগ তোলেন। তবে ৩৫ বছর বয়সী ওই নারীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন  প্রধান বিচারপতি।

গগৈ বলেন,  ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হচ্ছে দেশের বিচারব্যবস্থাকে। খোদ প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠায় দেশের ‘বিচারব্যবস্থা বিপন্ন’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারককে চিঠি লিখে ওই নারী জানান, ২০১৮ সালের ১০ এবং ১১ অক্টোবর তাকে নিজের বাড়িতে ডেকে যৌন হেনস্তা করেছিলেন রঞ্জন গগৈ।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘উনি আমার কোমর জড়িয়ে ধরে সারা শরীর স্পর্শ করছিলেন। আমি নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করলেও উনি আমাকে জোর করে ধরে রেখেছিলেন।’

প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তোলা তার এই অভিযোগ প্রকাশিত হয় স্ক্রোল, দ্য ওয়্যার, লিফলেট এবং দ্য ক্যারাভান পত্রিকায়। এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার এই অভিযোগ সামনে আসার পরই জরুরি ভিত্তিতে শুনানির ডাক দেয় সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ।

সেই বেঞ্চের প্রধান হিসেবে রঞ্জন গগৈ শুনানির সময় মন্তব্য করেন, ‘এই অভিযোগ অবিশ্বাস্য। এই অভিযোগ অস্বীকার করতে গেলেও যতটা নীচে নামতে হয়, তার জন্য আমি প্রস্তুত নই।’

যদিও এই মামলায় তিনি কোনও রায় দেবেন না, প্রবীণতম বিচারপতি অরুণ মিশ্রই এই মামলায় রায় দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।

এই অভিযোগের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে বলেও জানিয়েছেন রঞ্জন গগৈ। তার কথায়, ‘নিশ্চিতভাবেই এই সমস্ত অভিযোগের পেছনে কোনও একটা শক্তি কাজ করছে, যারা প্রধান বিচারপতির অফিসকেই নিস্ক্রিয় করে দিতে চাইছে।’

তার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই, সেই কারণেই এই রাস্তা বেছে নেওয়া হচ্ছে বলেও শুনানির সময় মন্তব্য করেছেন তিনি।

প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘২০ বছর ধরে চাকরি করার পর আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আছে ৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। আমার পিওনের কাছেও এর থেকে বেশি টাকা আছে। ২০ বছর ধরে চাকরি করার পর এটা কি প্রাপ্য ছিল আমার?’

একই সঙ্গে শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি বলেছেন, যে নারী তার বিরুদ্ধে এই মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন, তার সঙ্গে অতীতে বিভিন্ন অপরাধের যোগ আছে। ওই নারীর বিরুদ্ধে দু’টি পুলিশি মামলা আছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটাও শুনানির সময় বলেছেন, এই অভিযোগ প্রধান বিচারপতিকে ব্ল্যাকমেল করার কোনও কৌশল হতে পারে।

এই মুহূর্তে এই মামলায় কোনও রায় দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ। একই সঙ্গে পুরো বিষয়টিতে সংবাদমাধ্যমকে সংযত এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে অনুরোধ করেছেন তারা।

বিচারপতি অরুণ মিশ্র বলেছেন, ‘এই ধরনের অভিযোগ এলে বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নড়ে যেতে পারে।’ এই মামলার রায় ভবিষ্যতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।