অন্যের স্ত্রীকে তুলে নিতে গিয়েছিলেন এই যুবলীগ নেতা!

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০১৯ ০৬:২৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৯৩ বার।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় সংখ্যালঘু গৃহবধূকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে পিটুনিতে এক যুবলীগ নেতা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার দুপুরে উপজেলার ভান্ডারীপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাটুরিয়া থানায় একটি মামলা করেছে ওই গৃহবধূর পরিবার। 

স্থানীয়রা জানায়, শনিবার দুপুরে সাটুরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল খালেক ও যুবলীগের কর্মী শাহীনুর ইসলাম ভান্ডারীপাড়ার দিপক বসাকের স্ত্রী টুম্পাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে খালেকের সঙ্গে দিপকের কথা কটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দু’পক্ষে সংঘর্ষ হলে দিপকের পরিবারের সদস্যরা তালা দিয়ে আঘাত করলে খালেকের মাথা ফেটে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে সাটুরিয়া হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে যুবলীগ নেতাকে মারধরের খবর ছড়িয়ে দিপকের বাড়িতে হামলা চালায় তার সমর্থকরা। এ সময় দিপক বসাক, দীপ বসাক, দিনেশ বসাক ও দুলাল বসাককে মারধর করে তারা। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সাটুরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে।  

দিপক জানান, তার স্ত্রী টুম্পা বসাক একটি বেসরকারি স্কুলে চাকরি করেন। প্রায় দুই বছর ধরে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে ওই যুবলীগ নেতা তাকে উক্ত্যক্ত করেন। বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের জানানো হলেও কোন লাভ হয়নি। 

তিনি বলেন, ওই যুবলীগ নেতার অত্যাচারে আমার স্ত্রী কিছুদিন আগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল। শনিবার আমার বাসায় গিয়ে ওই যুবলীগ নেতা আমাকে বলেন, ‘তোর স্ত্রী তোকে তালাক দিয়ে আমাকে বিয়ে করেছে।’ এ সময় বিয়ের প্রমাণ দেখতে চাইলে যুবলীগ নেতা ফারুক স্বাক্ষর বিহীন স্ট্র্যাম্প দেখায়। পরে আমার স্ত্রীর হাত ধরে দুইতলা থেকে নিচে টেনে হিঁচড়ে নামানোর চেষ্টা করে। এ সময় নিজের পরিবারকে রক্ষা করতে গিয়ে তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এতে তিনি পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান।

টুম্পা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খালেক আমাকে রাস্তা-ঘাটে উক্ত্যক্ত করে আসছে। এব্যাপারে একাধিকবার সাটুরিয়া থানাকে জানানো করা হয়েছে। ওই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে থানায়  সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়েছে। এরপরও তিনি থেমে নেই। আমাদের ওপর এই নির্যাতনের প্রতিবাদ করার কেউ না থাকায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি। আমি ও আমার পরিবার ওই যুবলীগ নেতার হাত থেকে বাঁচতে চাই। 

টুম্পার বাবা দিনেশ বসাক বলেন, আমরা সংখ্যালঘু বলে ওই যুবলীগ নেতার ভয়ে চুপচাপ ছিলাম। তিনি আমাকেও হুমকি ধমকি দিয়েছেন। নিরুপায় হয়ে সাটুরিয়া থানা আ’লীগ নেতাদের কাছে অনেকবার অভিযোগ করেছি, কিন্তু কোন লাভ হয়নি। 

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতারা। নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন বলেন, এ বিষয়ে খালেককে একাধিকবার বলা হলেও তিনি দল বা আমাদের কথা রাখেননি।

এ বিষয়ে জানতে যুবলীগের নেতা আব্দুল খালেকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও কেউ সেটি রিসিভ করেননি। 

সাটুরিয়া থানার ওসি মোঃ মতিউর রহমান বলেন, দিপক বসাক নামে এক ব্যক্তি একটি মামলা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।