পুলিশের সঙ্গে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সভা

রমজানে বগুড়া শহরের ৮টি পয়েন্টকে যানজট মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত

অরূপ রতন শীল
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ১১:৫৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪০০ বার।

রমজানে বগুড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৮টি পয়েন্টকে যানজটমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে সম্মিলিতভাবে কাজ করবে পুলিশ এবং পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার বগুড়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দুপুরে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা। সভায় বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপ, ট্রাক মালিক সমিতি, জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সিএনজি চালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 
ওই সভায় শহরের যে ৮টি পয়েন্টকে যানজট মুক্ত রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো: জিরো পয়েন্ট সাতমাথা, সংলগ্ন শেরপুর রোডের সম্মুখভাগ, দত্তবাড়ি মোড়, মাটিডালি এলাকা, ঠনঠনিয়া বাসস্টান্ড, তিন মাথা রেলগেট, চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ড এবং নূরানী মোড়। এসব পয়েন্টে যানজটের কারণ এবং তা থেকে মুক্ত থাকার ক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরে তা বাস্তবায়নে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সহায়তা চাওয়া হয়। এ সময় পরিবনহ মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ পুলিশকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন এবং তাদের পক্ষ থেকেও বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে আন্তঃউপজেলা বাস টার্মিনাল ব্যবহারকারী বাস ও মিনিবাসগুলোকে চারমাথা থেকে নূরানী মোড় সড়কের পরিবর্তে তিনমাথা রেলগেট থেকে কামারগাড়ি হয়ে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়।
সভার শুরুতে পুলিশের পক্ষে বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিজ্জামান জানান, বছরের অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় রমজানে শহরে মানুষের আনাগোনা বাড়ে। একই কারণে যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। তবে ট্রাফিক আইন এবং শৃঙ্খলা মেনে চললে নির্ঝঞ্ঝাটে মানুষ ও যান চলাচল সম্ভব। তিনি বলেন, শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা থেকে নিউ মার্কেট পর্যন্ত সড়কে যানজটের মূল কারণ হলো যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং। আর সিএনজি চালিত অটোরিকশা এবং ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকের নিয়ন্ত্রনহীন চলাচলের কারণে শহরের দত্তবাড়ি ও মাটিডালি এলাকায় যানজট হচ্ছে। তবে রমজান মাসে পুলিশ এসব পয়েন্টে যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। এক্ষেত্রে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে যানজটের জন্য ব্যাটারি চালিত রিকশাকে দায়ী করে তা নিষিদ্ধ এবং সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রনের প্রস্তাব করেন। নেতৃবৃন্দ এক্ষেত্রে পুলিশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে বলেন, যেসব পয়েন্টে যানজট দেখা দেবে সেখানেই যান চলাচল নির্বিঘœ করতে তাদের সদস্যরা কাজ করবে। বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নেতা তৌফিক হাসান ময়না বলেন, শুধু রমজান মাসেই নয় প্রতিটি দিনই যাতে শহর যানজটমুক্ত থাকে সেজন্য আমাদের সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।
সভায় পুলিশ সুপারের পক্ষে সভাপতির বক্তৃতায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আব্দুল জলিল টার্মিনালে প্রবেশ করা যানবাহনে যাতে অবৈধভাবে কেউ চাঁদাবাজি করতে না পারে সেদিকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের নজর রাখতে বলেন। তিনি ওই সভায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা দেওয়া প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালনের আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা আপনাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করুন এবং পুলিশকে সহযোগিতা করুন। তাহলে যানজট থাকবে না।’
মতবিনময় সভায় অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সভাপতি শাহ্ আকতারুজ্জামান ডিউক, বগুড়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান আকন্দ, বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল লতিফ মণ্ডল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির নেতা আসাদুর রহমান দুলু, আলহাজ্ব শেখ, শাহাদৎ হোসেন শাহীন, আব্দুল মান্নান মণ্ডল ও আরিফুর রহমান মিলন।