পুলিশর দাবি নিহত জ্যোতির বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা ছিল

বগুড়ার শেরপুরে আবারও ‘গোলাগুলি’: এবার চরমপন্থী দলের আঞ্চলিক নেতা নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ও শেরপুর উপজেলা (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ মে ২০১৯ ০৪:১৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৬৫ বার।

বগুড়ার শেরপুরে আবারও নিজেদের মধ্যে ‘গোলাগুলিতে’ শফিউর রহমান জ্যোতি (৫৩) নামে চরমপন্থী দলের এক আঞ্চলিক নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে শেরপুর-ধুনট সড়কের বোয়ালকান্দি ব্রীজের কাছে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার দিবাগত রাতে ওই শেরপুর উপজেলারই ভবানীপুর বাজার সংলগ্ন ব্রীজের কাছে দু’দল চরমপন্থীর মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ লিটন (৩৬) ও আফসার (৪৫) নামে নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের দুই সদস্য নিহত হয়। লিটনের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এবং আফসার একই জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।
মঙ্গলবার রাতে ‘গোলাগুলিতে’ নিহত শফিউর রহমান জ্যোতি ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের প্রতাপখাদুলি গ্রামের মৃত মোজাফফর হোসেনের ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ানশুটার গান, ৩ রাউন্ড গুলি, ১টি রামদা এবং জ্যোতির ব্যবহৃত মোটর সাইকেল উদ্ধার করেছে। জ্যোতি খুব অল্প বয়সে চরমপন্থী দলের সঙ্গে যুক্ত হয় দাবি করে পুলিশের পক্ষ থকে বলা হয়েছে, তিনি নিষিদ্ধ ওই সংগঠনের আঞ্চলিক নেতা হিসেবে পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জে বিচরণ করতেন। পুলিশের রেকর্ডে তার বিরুদ্ধে ৫টি হত্যাসহ মোট ১৩টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ১৯৮৭ সালে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানা লুটের একটি মামলায় তার ৮৪ বছরের সাজা হয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, শেরপুর উপজেলার বোয়ালকান্দি এলাকায় শেরপুর-ধুনট সড়কে ব্রীজের কাছে গোলাগুলি হচ্ছে এমন খবর পেয়ে তিনি এবং শেরপুর থাার ওসি হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুস্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায় এবং একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনক পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের পাঠানোর সময় নাম জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি নিজের নাম জ্যোতি এবং বাড়ি ধুনট বলে জানান। ঘটাস্থল থেকে আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। পরে শজিমেক হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জ্যোতিকে মৃত ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, পুলিশের ক্রিমিনাল ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) খুঁজে নিহত জ্যোতির নামে তেরটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৫টিই হত্যা মামলা। শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকার পর চরমপন্থীরা গত ৮ এপ্রিল রাতে বগুড়ার শেরপুরে টহল পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে নিজেদের তৎপরতার কথা জানান দেয়। ৯ এপ্রিল পাবনায় চরমপন্থীদের আত্মসমর্পণের বিরোধিতা করে নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা ওই দিন রাতে শেরপুরের ভবানীপুর বাজার এলাকায় সর্বহারা পার্টির পোস্টার লাগাচ্ছিলেন। এ সময় টহল পুলিশ সেখানে গেলে তারা গুলিবর্ষণ করে। চরমপন্থীদের গুলিতে টহল দলের সদস্য শেরপুর থানার এএসআই নান্নু মিয়া আহত হন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ সেদিন ওই এলাকা থেকে চরমপন্থীদের লাগানো বেশকিছু পোস্টার এবং ‘গণযুদ্ধ’ নামে একটি পত্রিকাও উদ্ধার করে।