৪৬ কোটি ১৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা

বগুড়া পৌরসভার বাজেটের আকার কমলো: নাগরিকদের অসন্তোষ

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪ মে ২০১৯ ১২:২৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৭ বার।

বগুড়া পৌরসভায় এক বছরের ব্যবধানে বাজেটের আকার প্রায় সাড়ে ৮ ভাগ কমেছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বাজেট ছিল ৫০ কোটি ৪০লাখ টাকার আর আগামী অর্থ বছরের জন্য ৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা কমিয়ে ৪৬ কোটি ১৫ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হল। বগুড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান শনিবার দুপুর ১২টার দিকে পৌরসভা মিলনায়তনে নাগরিকদের উপস্থিতিতে বাজেট ঘোষণা করেন।


তবে নাগরিক সেবা বৃদ্ধির জন্য পৌরসভার বাজেটের আকার প্রতি বছরই  যেখানে বাড়ানো প্রয়োজন সেখানে তা কমিয়ে আনায় নাগরিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বাজেট বক্তৃতার সময় সিনিয়র নাগরিকদের অনেকে এ নিয়ে প্রকাশ্যেই মেয়রের কাছে রীতিমত কৈফিয়ত চেয়েছেন। বিশেষত বগুড়া পৌরসভার বর্ধিত অংশ যা মোট আয়তনের ৮০ ভাগ সেই অঞ্চলের বেহাল সড়ক ও অনুন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা কবে আধুনিকায়ন হবে তা অনেকেই জানতে চেয়েছেন।


ঘোষিত বাজেটে দেখা গেছে, বসত-বাড়িসহ রাজস্ব খাতে কর আদায়ের হার প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদায়ী অর্থ বছরে ওই খাতে আয় ছিল ২২ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ১৭৬ টাকা। আগামী অর্থ বছরে আয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৮৬ লাখ ২৮ হাজার টাকা। যদিও পৌরসভার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে বসত-বাড়ি খাতে কর বাড়ানো হয়নি তবে বকেয়া কর আদায় জোরদার করা এবং হাট-বাজার ইজারাসহ অন্যান্য খাতে কিছু আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। 


মেয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবর রহমান তার বাজেট বক্তৃতায় আগামীতে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে শিশু পার্ক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নতুন করে আও ১০টি শিক্ষার্থী ছাউনি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।


বাজেট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বগুড়া পৌরসভা বরাবরই সরকারি মঞ্জুরী সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। সরকারি সহায়তা কমে গেলে পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকা-ও স্থবির হয়ে পড়ে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরের জন্য ৪৬ কোটি ১৪ লাখ ৭৬ হাজার ৭১৬ টাকার যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে মধ্যে ৩৩ কোটি ৮ লাখ  ১৬ হাজার ৭১৬ টাকা সংস্থার রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে। বাদবাকি ১৩ কোটি ৬ লাখ টাকাই সরকারি মঞ্জুরী সহায়তা ধরা হয়েছে।


তবে পৌরসভার অর্থ বিভাগের দেওয়া হিসাববিবরণী অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারি মঞ্জুরী সহায়তা বরাবরই ১ কোটির নিচে থেকেছে। বিদায়ী অর্থ বছরে মঞ্জুরী এসেছে মাত্র ৮৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তাছাড়া রাজস্ব আয় ৩৩ কোটি ধরা হলেও প্রকৃতভাবে তা ২৩ কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। বিদায়ী অর্থ বছরে  এ খাতে আয় ছিল মাত্র ২২ কোটি ২৮ লাখ টাকা।


নাগরিকদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত মেয়র অ্যাডভোকেট মাহবুবর রহমান জানান, সরকারি অপ্রতুল বরাদ্দ এবং নিজস্ব তহবিলের অপর্যাপ্ততার কারণে কাঁচা সড়ক পাকা করা এবং বিদ্যমান পাকা সড়কগুলো মেরামত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি পৌরসভার জন্য সরকারি মঞ্জুরী সহায়তা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে বলেছেন, প্রায় দেড়শ বছরের প্রাচীণ এ পৌরসভার উন্নয়নে অন্তত ২০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এ বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় মাত্র ৭৭ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। পৌরসভার আয়তন ও জনসংখ্যার উপর ভিত্তি করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর টাকা বরাদ্দ হওয়া কাম্য। আশাকরি স্থানীয় সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে।


বাজেট অনুষ্ঠানে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল মালেক এবং বগুড়া পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ সিনিয়র নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।