মাথা থেঁতলে ধর্ষণ করা হয় নার্স তানিয়াকে

পুন্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ মে ২০১৯ ১৩:৪৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬১ বার।

কিশোরগঞ্জে নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন স্বর্ণলতা বাসের চালক এবং প্রধান আসামি নুরুজ্জামান ওরফে নুরু (৩৯)। রোববার কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করা হয়। খবর দেশ রুপান্তর 

পুলিশ নুরুজ্জামান নুরুর বরাত দিয়ে জানায়, ঘটনার দিন বিকেলে তানিয়া বাসে ওঠার পর থেকে তাকে অনুসরণ করে তারা। পথিমধ্যে যাত্রীরা নেমে যায়। তানিয়াকে একা পেয়ে কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে এসে বাসটি চালানোর জন্য সহকারী লালনকে চালকের আসনে বসায় নুরু।

নুরুজ্জামান নুর পুলিশকে আরো জানায়, এরপর সে সহকারীর কাজে নিয়োজিত হয়। কটিয়াদী থেকে বাসটি ছাড়ার পর একজন যাত্রী নেমে যায়। এরপর গজারিয়া এলাকায় ফরিদ মিয়ার কলাবাগানের পাশে নুরুজ্জামান ও তার সহযোগীরা বাসের দরজা-জানালা লাগিয়ে দেয়। পরে দুজনের সহায়তায় তানিয়াকে বাসের মাঝখানে ফেলে ধর্ষণে উদ্যত হয়।

তার বরাত দিয়ে পুলিশ আরো জানায়, ধর্ষণে বাধা দিতে তানিয়া কিল, ঘুষি মারে। পরে তাকে নিবৃত্ত করার জন্য তার মাথা ধরে বাসের পাটাতনে দুই-তিনটি বাড়ি মারা হয়। ফলে তানিয়া নিস্তেজ হয়ে পড়ে। প্রথমে চালক নুরুজ্জামান, পরে সহকারী লালন ও নুরুজ্জামানের খালাতো ভাই বোরহান পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

ওই বাসচালক আরো জানায়, তানিয়াকে এরপর বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় তারা। তারা তানিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে বলে প্রচার চালায়। বাস থেকে ফেলে দেওয়ার পর পথচারীরা তানিয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। চালক ও তার সহকারী এ সময় তানিয়া বাস থেকে অসাবধানে নামতে গিয়ে পড়ে যায় বলে প্রচার চালায়।

এরপর তানিয়াকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে স্থানীয় সততা ফার্মেসিতে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে সরকারি হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয়। পরে চালক, সহকারী ও তার সহযোগী তাকে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করে।

পরে নুরু ও তার সহযোগীরা পালিয়ে চলে যায়।

এদিকে তানিয়ার বড় ভাই শহীদুল ইসলাম সুজন জানান, পুলিশ তানিয়ার ব্যাগ, জামাকাপড়, টিভি, উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলেও গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, নগদ টাকা, মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে পারেনি।

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ময়নাতদন্তে তানিয়াকে দলবদ্ধ ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তার মাথার পেছনে শক্ত বস্তুর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ফলে পেছনের খুলি দ্বিখণ্ডিত হয়ে রক্তক্ষরণের তার মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, তা ছাড়া ইতিপূর্বে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য স্বর্ণলতা পরিবহনের যে বাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল, তদন্তে তা মিথ্যা বলে প্রমাণ হয়। এরপর প্রকৃত বাসটি গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার উজুলী ঈদগাহ মাঠ থেকে জব্দ করা হয়। জব্দের পর বাসটি সিআইডি’র ক্রাইমসিন বিভাগ আলামত সংগ্রহ করে ফরেনসিক বিভাগে পাঠিয়েছে।

অপর দিকে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রবিবার মামলার ঘটনাস্থল কটিয়াদী থানা ও বাজিতপুর থানা পরিদর্শন করেন।

সেখানে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মামলার বাদী, সাক্ষী, পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময় করেন।