সন্তানের জন্য দুধ ‘চুরি’ করা বেকার সেই বাবাকে চাকরি দিলো স্বপ্ন

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ মে ২০১৯ ১৪:৩৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৮৩ বার।

তিন মাস ধরে চাকরি নেই। বেতন নেই। ঘরে ছোট বাচ্চা। দুধ কেনার টাকা নেই। নিরুপায় হয়ে সন্তানের ক্ষুধার যন্ত্রণা সইতে না পেরে দুধ চুরি করেন এক বাবা। শেষপর্যন্ত পুলিশের মধ্যস্থতায় অসহায় সেই বাবাকে চাকরি দিয়েছে সুপারশপ ‘স্বপ্ন’।

রবিবার দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনারের (এসি) কার্যালয়ে তাকে ডেকে এনে তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়।

সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ওই ব্যক্তিকে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ তাদের অফিসে নিয়ে গেছে। সেখানে তার একটি ইন্টারভিউ হবে। এরপর যোগ্যতা অনুযায়ী পদ ও বেতন নির্ধারণ করবে স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ।খবর ইত্তেফাক

গত শুক্রবার রাতে সুপারশপ ‘স্বপ্ন’র খিলগাঁও শাখা থেকে ওই ব্যক্তি একটি দুধের প্যাকেট চুরি করেন বলে অভিযোগ উঠে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এরপরই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন।

তিনি লিখেন, ‘গতকাল রাত আনুমানিক ৮.৪৫ মিনিট। বাকি সড়কে চেকপোস্ট ডিউটি তদারকি করছিলাম। হঠাৎ এক জায়গায় মানুষের হট্টগোল দেখতে পেলাম। ঘটনা কি তা দেখার জন্য আমার এক সাব-ইন্সপেক্টরকে পাঠালাম। কিছুক্ষণ পর বেশ কিছু লোক ২৫-৩০ বছর বয়সী একজন লোককে টেনে-হিঁচড়ে আমার সামনে নিয়ে আসলো। ঘটনা জানতে চাইলাম।’

একজন বলল, ‘স্যার, লোকটা চোর, চুরি করে পালাচ্ছিল।’ পাশে লোকটাকে শক্ত করে ধরে রাখা এক সিকিউরিটি গার্ড আমাকে বলল, ‘স্যার, লোকটা স্বপ্ন সুপার শপ থেকে চুরি করে পালাচ্ছিল।’

‘আমি জিজ্ঞেস করলাম, কি চুরি করেছে? সিকিউরিটি গার্ড বলল, ‘স্যার, সে এক প্যাকেট দুধ চুরি করে পালাচ্ছিল।’ আমার খটকা লাগল, আমি জিজ্ঞেস করলাম ‘দুধ’? তখন সিকিউরিটি গার্ড অতি উৎসাহ নিয়ে বলল, ‘স্যার বাচ্চাদের ন্যান দুধের প্যাকেট।’

‘আমি লোকটার দিকে তাকালাম। আমার বয়সেরই হবে। দেখতে ভদ্রলোকই মনে হলো। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, চুরি করলেন কেন? সে কেঁদে ফেললো। তারপর বললো, ‘স্যার, তিন মাস হলো চাকরি নাই, বেতন নাই। ঘরে ছোট বাচ্চা, দুধ কেনার টাকা নাই।’

‘সঙ্গে সঙ্গে আমার ছেলের চেহারা মনে পড়লো। মনে হলো কতটা নিরুপায় হলে একজন বাবা এই কাজ করতে পারে। ওর জায়গায় আমি থাকলেও হয়তো একই কাজ করতাম।’

‘সিকিউরিটি গার্ডকে জিজ্ঞেস করলাম, দুধের প্যাকেটের দাম কত? সে বলল, ৩৯০ টাকা স্যার। আমি তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে বিল রাখতে বললাম এবং লোকটিকে ছেড়ে দিতে বললাম।’