সপ্তমবারে এসে কি টাইগারদের সেই হাহাকার ঘুচবে?

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ মে ২০১৯ ১২:৫৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৯০ বার।

দ্বিপক্ষীয় সিরিজে বাংলাদেশের ট্রফি জয় এখন নিয়মিত ঘটনা। সে যত বড় প্রতিপক্ষই হোক না কেন। কিন্তু ত্রিদেশীয় সিরিজ বা কোনো বহুজাতিক আসরে শিরোপা মানেই বাংলাদেশের জন্য হাহাকার। ছয় ছয় বার বাংলাদেশ যে সুযোগ পেয়েও লুফে নিতে পারেনি। বেশির ভাগ সময়ই উপহাস করেছে নিয়তি। টাইগারদের মুখে গ্রাস কেড়ে নিয়ে শিরোপার উল্লাস করেছে প্রতিপক্ষ। খবর দেশ রুপান্তর 

আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজ বাংলাদেশের সামনে সুযোগ করে দিয়েছে না পারার গল্পটা বদলানোর। সপ্তমবারে এসে কি ট্রফি জয়ের এই হাহাকার ঘুচবে মাশরাফী-সাকিবদের?

স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজটিতে এক ম্যাচ হাতে থাকতেই ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার ডাবলিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের শিরোপার লড়াই।

তার আগে বুধবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পুলের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে টাইগাররা। যে ম্যাচটি এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। তবে বিশ্বকাপ সামনে রেখে বাংলাদেশের রিজার্ভ বেঞ্চ ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগও।

ত্রিদেশীয় এই সিরিজটাই আসলে বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশর জন্য রিহার্সালের দারুণ সুযোগ হয়ে এসেছিল। এখন পর্যন্ত যেখানে সব মনের মতোই হচ্ছে। ফাইনালে ট্রফি জিতে ইংল্যান্ডে যেতে পারলে এর মতো সার্থকতা হবে নাই কিছুই। বাংলাদেশের চোখ তাই ট্রফিতেই।

এই ট্রফি জয়ে জন্য নিশ্চিত করেই বাংলাদেশকে প্রেরণা জুগাবে আগের ছয় ফাইনালের দুঃখগুলো। সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহকে কি তাতিয়েও দেবে না? বারবার একই গল্প কে লিখতে চায়!

একটু পেছনে ফিরে মনে করা যাক সেই বেদনা, হাহাকার, কষ্টগুলো। প্রথম গল্পটা ২০০৯ সালের। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। শিরোপার মঞ্চে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে লড়েও ম্যাচটি নিজেদের করতে পারেনি টাইগাররা। কুমার সাঙ্গাকারা ও মুত্তিয়া মুরালিধরনের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ের কাছে হেরে যায় মোহাম্মদ আশরাফুলের দল।

এরপর ২০১২ সালের সেই এশিয়া কাপ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ রানের হার, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেই যা চিরকালীন এক আক্ষেপের গল্প। সেবার হারের পর মাঠেই কেঁদেছিলেন সাকিব, মুশফিক, নাসিররা।

চার বছর পর (২০১৬ সালে) একই আসরে সেই দুঃখ ভোলার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের কাছে ফাইনালে ৮ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে সেই আসরটি হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে।

এরপর গেল বছরই তিন-তিনবার একই সুযোগ তৈরি করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রতিবারই মুঠো থেকে বেরিয়ে গেছে শিরোপার স্বাদ পাওয়ার সুযোগ। জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হার, মার্চে নিদাহাস টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতের বিপক্ষে স্বপ্ন ভঙ্গের পর এশিয়া কাপের ফাইনালেও একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে হার বাংলাদেশের।

সব মিলে বহুজাতিক আসরের ফাইনাল মানেই যেন বাংলাদেশের জন্য চিরন্তন দুঃখগাথা। কিন্তু গেল বছর নয় মাসের ব্যবধানে তিন-তিনটি আসরে ফাইনালে ওঠেই বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে ট্রফি জয় খুব দূরের কোনো বিষয় নয়। সপ্তমবারে এসে টাইগাররা তাই দুর্গ জয় করবে এমনটাই চাওয়া সবার।

সেটি যে অসম্ভবও নয় তা এই সিরিজে প্রমাণও করে দিয়েছে মাশরাফী বাহিনী। এর মধ্যে এই সিরিজে দুই বারের দেখাতেই ফাইনালিস্ট উইন্ডিজকে হারিয়েছে হেসে খেলে। যে দলটি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুইবারের দেখায় নিজেদের শক্তি দেখিয়েছে, সেই দলটিই বাংলাদেশের সামনে ছিল ম্রিয়মাণ।

ব্যাটিং কিংবা বোলিং দুই বিভাগেই নিজেদের সেরাটা মেলে ধরতে পেরেছে টাইগাররা। ফাইনালে ঠিক সেই খেলাটা খেলতে পারলেই তো স্বপ্ন ধরা দিতে বাধ্য।

বাংলাদেশের দর্শকেরা তাই মাশরাফীর হাতে ট্রফি দেখার রঙিন স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে এরই মধ্যে। পারবে তো বাংলাদেশ?