উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য বগুড়া আঃ হঃ কলেজ অধ্যক্ষের পরামর্শ

অরূপ রতন শীলঃ
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৪:১৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৮৭৭ বার।

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রধানত তিন স্তর বিশিষ্ট- প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা স্তর। একজন শিক্ষার্থীর জন্য তিনটি স্তরই সমান গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু নিজের ভবিষ্যৎ কোন দিকে ধাবিত হবে এবং কোন পেশায় প্রবেশের সুযোগ মিলবে তা স্থির হয়ে যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ফলাফলের ভিত্তিতে। সেক্ষেত্রে ভালো ফলাফলের কোন বিকল্প নেই।

২০১৯ সালে যারা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শাহজাহান আলী। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কিভাবে ভালো ফলাফল করা সম্ভব তার কিছু কৌশল তিনি পুণ্ড্রকথার অনুরোধে তুলে ধরেছেন।


উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য যা অনুসরণীয়-

আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। সেই হিসাবে তোমাদের হাতে তেমন সময় নেই। তো প্রথমেই মনে রাখতে হবে- এই সময়টা আরামে কাটানোর সময় নয়। এখন যে যত বেশি পরিশ্রম এবং কষ্ট করবে তার ভবিষ্যৎ ততই সুখকর এবং আরামদায়ক হবে। সময় কখনই নষ্ট করা যাবে না। যখনই সময় পাবে তখনই পড়তে হবে। এই সময়ে যত বন্ধুত্ব, প্রেম এবং আড্ডা তার সবই করতে হবে পাঠ্য বইয়ের সঙ্গে। তবেই হবে জয়।

যেহেতু সময় খুব কম, তাই দৈনন্দিন লেখাপড়া, নাওয়া-খাওয়া, নামাজ বা উপাসনা, ঘুম এবং বিশ্রামের জন্য তোমাদের একটি কার্যকর কর্ম পরিকল্পনা বা রুটিন তৈরি করতে হবে। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা রুটিন তৈরিতে খুবই আগ্রহী। এমনকি দু’একদিন সেটা মেনেও চলে। কিন্তু তার পর সেটা আর অনুসরণ করে না। এমনটা কখনোই করা যাবে না। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে শপথ নিতে হবে- ‘একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য আমরা আমাদের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছি। অতএব যত কষ্টই হোক আমরা সেটা মেনে চলবো- চলতে হবেই।

যদি কেউ সারা বছর নিয়মিত ক্লাস করে এবং প্রিয় শিক্ষক ও অভিভাবকদের পরামর্শ অনুসারে মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করে তাহলে তাদের পরীক্ষা নিয়ে সামান্য চিন্তা থাকলেও দুশ্চিন্তার কোনো কারণ থাকবে না বলে আমি মনে করি।

তবে যেসব শিক্ষার্থী অমনোযোগিতাসহ নানা কারণে এতদিন লেখাপড়ায় ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারনি তাদের বলবো, মনের গভীরে উচ্চারণ করো- আমাকেও ভালো করতে হবে। আমিও পারবো। অন্যরা পারলে আমি পারবো না কেন?  আমাকেও পারতে হবে। অবশ্যই আমি পারবো। মনে রেখ, সব ভয়কে জয় করেই ছিনিয়ে আনতে হয়। আর এভাবেই আসে সফলতা। জীবনের প্রতিটি কাজে জয়ী হওয়ার জন্য থাকা চাই আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সুদৃঢ় আত্মবিশ্বাস। দুশ্চিন্তায় কোন সুফল নেই। কাজেই মাথা থেকে সব দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলো।

এখন কাজ একটাই- পরীক্ষায় ভালো করা। প্রতিটি বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের খুঁটিনাটি সব বিষয় ভালভাবে আয়ত্বে রাখার চেষ্টা কর।

তোমরা নিশ্চই জানো, কারো সাজেশনে কেবল বাছাই করা প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে পরীক্ষায় ভালো করার দিন এখন আর নেই। সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষায় ভালো করার জন্য তোমাদেরকে সঠিক ভাবে জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং নির্ধারিত পাঠ্যসূচির সকল বিষয় আত্মস্থ করতে হবে।

তোমাদের মধ্যে অনেকেই আছ- যারা এক সাথে অনেক কিছু মনে রাখতে পার না। যে কারণে তোমরা পরীক্ষাকে ভয় পাও, দুশ্চিন্তা কর। তোমাদের উদ্দেশ্যে বলছি, শিক্ষকদের সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ও সহজ কয়েকটি অধ্যায় বাছাই করে নাও। তারপর সেগুলো খুব ভালোভাবে আয়ত্ব করার চেষ্টা করে যাও। এমনভাবে পড় যেন সেই অধ্যায়ের যে কোন প্রশ্নের সঠিক উত্তর তোমরা দিতে পার। তাহলেই দেখবে সহজেই তুলে নিতে পারো পাশ নম্বরের চেয়ে অনেক বেশি নম্বর।

শুধু পড়লেই চলবে না। লিখতেও হবে বারবার। মনে রেখ, একবার লেখা দশবার পড়ার চেয়ে বেশি ফলপ্রসূ। পড়ে জেনে নাও বিস্তারিত। মুখস্থ করার চেয়ে উত্তম নিজের মত করে লিখতে শিখা। লিখ। মিলিয়ে দেখ। ভুল শুধরে নাও। আবার লিখ। আবার মিলিয়ে দেখ। ভাব। আবার লেখ। দেখবে বইয়ের মত হুবহু না হলেও সঠিক হয়েছে তোমার উত্তর।