সরকার সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ: ড. কামাল

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মে ২০১৯ ১১:৫৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৯ বার।

বর্তমান সরকারকে অনির্বাচিত উল্লেখ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ধান উৎপাদনে কৃষক রেকর্ড করেছে। কিন্তু ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে তারা পোড়াতে বাধ্য হচ্ছে। শুধু ধানের ন্যায্যমূল্যের ক্ষেত্রেই নয়, সব ক্ষেত্রেই সরকার ব্যর্থ। 

বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 'কৃষক-জনতা এক হও, সরকার হটাও-দেশ বাঁচাও' শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণফোরাম। 

ড. কামাল বলেন, এটি একটি দায়িত্বহীন সরকার। কৃষক, ক্রেতা, সাধারণ মানুষদের প্রতি সরকারের যে দায়িত্ব আছে, তারা সেটা পালন না করে বরং সংকট সৃষ্টির ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। আমাদের দুর্ভাগ্য এমন একটি সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে হচ্ছে, সইতে হচ্ছে। সংবিধান লঙ্ঘন করে এ ধরনের একটি অনির্বাচিত সরকার চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই চাপিয়ে দেওয়া সরকারকে বহন করায় সবাইকে মূল্য দিতে হচ্ছে। তাই দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জাতিকে এগিয়ে নিতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য শক্তি প্রয়োগ করে জনগণ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে।

সংসদের বাইরে অন্যতম বিরোধী জোট হিসেবে ঐক্যফ্রন্ট কোনো কর্মসূচি দেবে কি-না সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমরা কিছু সুপারিশ দিয়েছি। জোটের সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তারাও কিছু সুপারিশ দিয়েছেন।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া বলেন, সরকার কৃষকের প্রতি সহানুভূতিশীল নয়। সরকার ঋণখেলাপি ও শেয়ারবাজার লুটপাটকারীদের সহায়তা করলেও কৃষকের ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

দলের নির্বাহি সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন। সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফড়িয়া-মিল মালিক সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরকার আঁতাত করে লেনদেন করছে। এর মূল্য দিতে হচ্ছে কৃষকদের।

তিনি বলেন, প্রতি মন ধানের উপাদন খরচ ৭৪৩ টাকা কিন্তু তা বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়। লোকসান হচ্ছে কমপক্ষে ১৪৩ টাকা। সরকার মে মাস থেকে ১৩ লাখ টন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ঠিক করেছে। মে মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও গত মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার ২৬৯ মেট্টিক টন চাল সংগ্রহ করেছে। কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, রংপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁওসহ বেশিরভাগ বড় বড় মোকামে ধান-চাল কেনা প্রায় বন্ধ রয়েছে। 

অধ্যাপক আবু সাইয়িদ আরও বলেন, ধান কেনা নিয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে, তামাশা করছে। এ কারণে গ্রামের ভূমিহীন চাষীরা ঢাকায় রিকশা চালায়। একজন কৃষক তার পিঠে শ্লোগান লিখেছে, 'করবো না আর ধানের চাষ, দেখি এবার কি খাস ?'

তিনি বলেন, দেশের ধান-চাল সরকার কিনছে না। অথচ চাল আমদানি করছে। দেশ থেকে টাকা পাচার করতেই এই আমদানি করা হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি সামলাতে গণফোরামের পক্ষ থেকে চার দফা সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- হাটগুলোতে সরকারিভাবে ক্রয়কেন্দ্র খুলে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা, খাদ্যগুদাম না থাকলে কৃষকের গোলাতেই ধান রাখা, শস্যবীমা চালু এবং শস্য বহুমুখী করতে ও দেশে কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরিতে সহায়তা প্রদান করা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহসীন রশিদ, মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক আহমেদ প্রমুখ।