কোনো আলোর পথ আছে কি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হাবিবের জন্য?

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ মে ২০১৯ ১১:৪৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৬ বার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১০-১১ সেশনের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র ছিলেন হাবিবুর রহমান। জন্ম থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সংগ্রাম করতে হয়েছে প্রতিনিয়ত। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর শুরু হয় কর্মক্ষেত্রে নিজেকে প্রমাণের লড়াই। সে অনুযায়ী নিতে থাকেন প্রস্তুতি। ৩৭তম সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় (বিসিএস) প্রিলিমিনারি, রিটেন ও ভাইভা দেন। নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণ হলেও এখনো মেলেনি চাকরিতে প্রবেশের সুযোগ। খবর বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম 

বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রাপ্ত বৃত্তি সাময়িকভাবে তার কষ্ট লাঘব করলেও বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন। সর্বশেষ তার একাডেমিক লাইফের সকল সার্টিফিকেট চুরি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চরমভাবে।

হাবিবের বন্ধু শরীফুল ইসলাম বলেন, হাবিব সংগ্রাম করে আজকে এই পর্যন্ত এসেছে। দুর্ভাগ্যবশত সে বাসায় যাওয়ার পথে টঙ্গী স্টেশন থেকে বাসের জন্য অপেক্ষমান থাকা অবস্থায় চোর তার ট্রাংকটি নিয়ে চলে যায়। একজন অসহায়ের সারাজীবনের অর্জন সার্টিফিকেট ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা’ সূর্য সেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন হাবিব। পড়াশোনা শেষ হওয়ায় হল ছেড়ে দিয়ে ওঠেন মিরপুরের একটি মেসে। জীবিকার তাগিদে ফেরি করে ওষুধ বিক্রিও করেছেন। সর্বশেষ তার ঠিকানা ছিলো টঙ্গীতে প্রতিবন্ধীদের ট্রেনিং ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে। কম্পিউটার ট্রেনিং ও কল সেন্টারের কাজের জন্য কোর্স করেছেন।

হাবিবের আরেক বন্ধু এনামুল হাসান বলেন, সবই করা আছে তার, শুধু নাই কাজ করার সুযোগ। বিসিএসে উত্তীর্ণ একজন অন্ধকে ন্যূনতম পদের একটি চাকরিও কি দিতে পারে না পিএসসি? অথবা অন্য কোন সংস্থা, অফিসেও কি জোটে না একটি চাকরি? যার বেতনে জীবন ধারণ করবে একজন অন্ধ মানুষ। এখন কেউ চাকরি দিতে চাইলেও পাবে কিভাবে? তার সমস্ত কাগজপত্র তো এখন চোরের হাতে। কোন আলোর পথ কি আছে হাবিবের জন্য? নাকি অন্ধকারেই হারিয়ে যাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী গ্র্যাজুয়েট হাবিবের ভবিষ্যত?

এ বিষয়ে হাবিব বলেন, আমি এখনো স্বপ্ন দেখি নন-ক্যাডারে আমার কিছু একটা হবে। প্রথম তালিকায় আমার নাম আসেনি। আশা করছি দ্বিতীয় তালিকায় আমার নাম আসবে। কিন্তু সার্টিফিকেটগুলো হারিয়ে একটা জটিলতায় পড়লাম। 

তার হারানো সার্টিফিকেট কেউ কোনভাবে পেয়ে থাকলে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেছেন মেহেরপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা হাবিব।