একাদশে লিটন ও রুবেল!

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ জুন ২০১৯ ০৬:১৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৮১ বার।

বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দারুণ সূচনা করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারলেও টাইগারদের লড়াই ছিল অসাধারণ। পুঁজিটা একটু বেশি হলে সেই ম্যাচও জিতত।

দুই ম্যাচে ভালো খেলার ধারাবাহিকতার কোনো ছাপ খুঁজে পাওয়া যায়নি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে। ১০৬ রানে ম্যাচ হারার পর নির্বাচকদের কপালে ভাজ পড়ে। দলে একজন নিরেট গতিদানবের অভাব অনুভব করে টিম ম্যানেজমেন্ট।

এছাড়া ব্যাটিং লাইন-আপটাও আরেকটু শক্তিশালী করার কথা ভাবছেন নির্বাচকরা। একজন ইনফরমার ব্যাটসম্যানকে একাদশে ঢোকানোর তাগিদ অনুভব করছেন তারা।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আসল চ্যালেঞ্জ শুরু হচ্ছে আজ থেকে। ব্রিস্টলে বাংলাদেশ সময় সাড়ে তিনটায় শুরু হবে ম্যাচ। খুশির খবর, কাল সকাল থেকে ব্রিস্টলে ছিল ঝলমলে রোদ। সর্বশেষ দুই ম্যাচের আগেরদিন বৃষ্টির কারণে ইনডোরে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। এ নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন দলের সবাই। টানা ক’দিনের বৃষ্টির পর সোমবার রোদে অনুশীলন করায় স্বস্তি পেয়েছেন মাশরাফিরা।

লংকানদের বিপক্ষে নতুন শুরুর আশা নিয়ে নামবেন তারা। প্রথম তিন ম্যাচে বাংলাদেশ অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে খেলেছে। শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচে দুটি পরিবর্তনের কথা শোনা যাচ্ছে।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ দল একজন বাড়তি পেসারের অভাব অনুভব করে। এরপর কার্ডিফে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের সামনে বাংলাদেশ বোলাররা দাঁড়াতেই পারেননি। প্রায় সব বোর গড়ে ৭ থেকে ৮ করে রান দিয়েছেন। স্পিন থেকে পেসার কোন বিভাগেই রান আটকাতে পারেনি বোলাররা। ওই ম্যাচেও একজন নিখাঁদ পেসারের অভাব বোধ করে বাংলাদেশ।

ওভাল-কার্ডিফের মতো বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে ব্রিস্টলেও। এখানকার উইকেটও বৃষ্টির কারণে ঢাকা ছিল। রোববার অনুশীলনও করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। তবে সোমবার অনুশীলন করছেন টাইগাররা। ম্যাচের উইকেটে ঘাস থাকবে। এছাড়া ম্যাচের দিন বৃষ্টির প্রবণ সম্ভাবণা আছে। পুরো ম্যাচ হওয়া নিয়ে আছে সংশয়ও। আকাশে উড়ে বেড়ানো মেঘ, সঙ্গে বাতাস এবং বৃষ্টি পরবর্তী উইকেট হলে পেসারদের দিকে বাড়তি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবে।

তাই সিমিং কন্ডিশনের কথা বিবেচনা করে চতুর্থ পেসার হিসেবে তাই রুবেল হোসেনকে নেয়া হতে পারে। রুবেলকে দলে নিলে বাদ পড়বেন কে? মোস্তাফিজ না সাইফউদ্দিন? না এ দুজনের কাউকে বাদ দিতে চাইবেন না অধিনায়ক মাশরাফি। কিন্তু একজনকে তো বাদ দিতেই হবে। সেক্ষেত্রে কোপটা পড়তে পারে মেহেদী হাসান মিরাজ কিংবা মোসাদ্দেকের ওপর। মোসাদ্দেকের ব্যাট সম্প্রতি হাসছে। সে কারণে তার দলে থাকার সম্ভাবনা বেশি। তাই মিরাজকে স্কোয়াড থেকে ছেটে ফেলা হতে পারে।

ব্যাটিংটা কপালে ভাজ ফেলছে নির্বাচকদের। ব্যাটিংয়ে তামিম ইকবাল এখনও বড় স্কোর করতে পারেননি। মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ের ধরন নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। সর্বশেষ এক বছর দলের চাপের সময়ে আস্থা নিয়ে ব্যাটিং করা মোহাম্মদ মিঠুনও প্রথম তিন ম্যাচে ভালো করতে পারেননি।

গত তিন ম্যাচে তামিমের সংগ্রহ (১৬, ২৪, ১৯)। সোজা কথায় বলা যায়, বৈশ্বিক আসরে এখনও তিনি নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। তবে তামিমকে আগামী ম্যাচে বসিয়ে রাখার কোনো সম্ভাবনা নেই।কারণ ড্যাশিং এই ওপেনার যেকোনো সময় রানে ফেরার সামর্থ্য রাখেন।

মিঠুন তিন ম্যাচে করেছেন ২১, ২৬, ০ রান। কাজেই তাকে দলে রাখার প্রয়োজন দেখছে না টিম ম্যানেজমেন্ট।

মিঠুন বাদ পড়তে দলে ঢুকবেন কে? একাদশের বাইরে রয়েছেন দুই আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান লিটন দাস ও সাব্বির রহমান।লিটন টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যান। তাই হয়তো পাঁচে লোয়ার মিডল অর্ডার সাব্বির রহমানকেই লংকাবধের মিশনে বেছে নিতে পারেন টাইগার দলপতি মাশরাফি।

তবে সাব্বিরের চেয়ে সম্প্রতি পারফরম্যান্স বিবেচনায় এগিয়ে আছেন লিটন দাস। এ যুক্তিতে একটি সূত্র বলছে, মোহাম্মদ মিঠুনের জায়গায় শ্রীলংকার বিপক্ষে লিটন দাসের খেলা একরকম নিশ্চিত। বিশ্বকাপে এখনও কোনো ম্যাচ না খেললেও আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজ এবং ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ফর্মে ছিলেন লিটন। খেলেছেন ৭৬ ও ৭৩ রানের দুটি ইনিংস।

এ বিষয়ে ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের ক্রিকেটার নির্বাচন অনেক ভালো হয়েছে। ধারাবাহিক যারা পারফর্ম করছে তাদেরই দলে রাখা হয়েছে। আমার বিশ্বাস, দলে এখন যে সুযোগ পাবে ভালো করার জন্য নিজেকে উজাড় করে দেয়ার চেষ্টা করবে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচকরা আমাদের ব্যাটসম্যানদের যথেষ্ট সমর্থন দিচ্ছেন। কাউকে দলে জায়গা দেয়ার মানে এই নয় যে, সংবাদমাধ্যমের চাপের কারণে সেটা করা হচ্ছে। ভালো পারফর্ম করেছে বলেই তাদের সুযোগ দেয়া হচ্ছে।

অধিনায়কও তরুণ ব্যাটসম্যানদের সমর্থন দিচ্ছে। তারা যেন দেশের জন্য ভালো করতে পারে।’ ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘লিটন একজন ভালো ব্যাটসম্যান। আমরা তার ওপর আস্থা রেখেছি। এশিয়া কাপে লিটন খারাপ খেলেছে। তারপরও তাকে সমর্থন দিয়েছি। এরপরই সে ফাইনালে সেঞ্চুরি করেছে।’