কারাগারে বসেই হামকা নুরুলের মাদক ব্যবসা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ জুন ২০১৯ ১২:১৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২০ বার।

ইয়াবাসহ এক কারারক্ষী ও তিনজনকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে মাদক কেনাবেচা করতেন নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী নূর আলম ওরফে হামকা নুরুল আলম। কারাগারের বাইরে থেকে মাদক সংগ্রহ করে নিয়ে যেতেন পুলিশের হাতে গ্রেফতার কারারক্ষী সাইফুল ইসলাম। তাকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য পুলিশের কাছে দিয়েছেন তিনি। 

শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হামকা নুরুল আলমের বিরুদ্ধে নগরের বিভিন্ন থানায় প্রায় দুই ডজন মামলা রয়েছে। এসব মামলায় গ্রেফতার হয়ে কয়েক বছর ধরে কারাগারে আছেন তিনি।

গ্রেফতার তিনজন হলেন- কোতোয়ালী থানার ৩৫ নম্বর বাটালী রোডের আব্দুস সোবহানের বাড়ির আবুল বাশরের ছেলে দিদারুল আলম মাসুম ওরফে আবু তাহের মাসুম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার সিদ্দিক আলীর ছেলে আজিজুল ইসলাম জালাল ও কোতোয়ালী থানার বিআরটিসি ব্রয়লার এভিনিউ আবদুল জলিলের মেয়ে আলো আক্তার।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন জানান কারারক্ষী সাইফুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তিনি ইয়াবা সংগ্রহ করেছেন মাসুমের কাছ থেকে। এরপর হালিশহর কাঁচাবাজার এলাকায় একজনের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন তিনি। ৫০টি ইয়াবার মধ্যে ওই লোকের হাতে ১০টি দেওয়ার কথা ছিল তার। বাকি ৪০টি ইয়াবা কারাগারে নুরুল আলমকেই বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। মাসুম আগেও গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন। তখনই নুরুল আলমের সঙ্গে তার পরিচয়। সেই সূত্রে মাসুম জেলে থাকা নুরুল আলমকে নিয়মিত ইয়াবা সরবরাহ করতেন। আর তাদের এই লেনদেন হতো কারারক্ষী সাইফুলের মাধ্যমে।

জিজ্ঞাসাবাদে মাছুম জানিয়েছে, কারাগার থেকে নুরুল আলম তাকে ফোন করে কারারক্ষী সাইফুলের মাধ্যমে ইয়াবা পাঠানোর কথা বলে। সকালে আলো আক্তারের কাছ থেকে মাসুম ৫০টি ইয়াবা সংগ্রহ করে। দুপুরে সাইফুল ইয়াবাগুলো মাসুমের কাছ থেকে বুঝে নেন। তিন দিন আগেও একবার সাইফুলকে ৫০টি ইয়াবা দেওয়ার কথা তিনি জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে জালাল পুলিশকে জানিয়েছে, এক বন্ধুর মাধ্যমে হামকা নুরুল আলমের সঙ্গে তার পরিচয়। নুরুল আলম তাকে ফোন করে গাঁজা পাঠানোর কথা বলেছিলেন। সাইফুল তার কাছ থেকে সেই গাঁজা সংগ্রহ করে পৌঁছে দিতেন।

হামকা নুরুল আলম দুধর্ষ সন্ত্রাসী ও ছিনতাকারী। ‘হামকা গ্রুপ’ নামে একটি সন্ত্রাসী দলের নেতা তিনি। হামকা গ্রুপ ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাজি চালিয়ে চট্টগ্রাম নগরে ত্রাস সৃষ্টি করে। পরে পুলিশের তৎপরতায় নিয়ন্ত্রণে আসে তাদের অপরাধ। কয়েক বছর আগে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান নুরুল আলম। সেখানে বসেই মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং মাদকের কারবার চালিয়ে আসছিলেন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। 

নগর পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ৩২ নম্বর সেলের ৩ নম্বর কক্ষে আছেন হামকা নুরুল আলম। সেখানে থেকে তিনি কারাগারের ভেতর এবং বাইরে ইয়াবা কেনাবেচা করে আসছিলেন। এমনকি তার সহযোগীদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে তার। গত বছর নিজাম উদ্দিন নামে এক ছিনতাইকারীর আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে আসে।