‘মুরসিকে ধীরে ধীরে হত্যা করা হয়েছে’

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০১৯ ০৮:৫৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৮ বার।

মিসরের বিচার বিভাগীয় একটি সূত্র বলছে, আদালতে তার বিচারের শুনানিতে বিরতি চলার সময় তিনি মূর্ছা যান।

গুপ্তচরবৃত্তির মামলার একটি অধিবেশন সবে শেষ করেছেন আদালত কর্মকর্তারা। তখন বিচারককে তারা জানান, মুরসি মূর্ছা গেছেন, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার। পরবর্তী সময়ে হাসপাতালেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে এসব তথ্য জানা গেছে।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মুরসি শেষ বারের মতো নিজের পরিবারের দেখা পান। তার মাস খানেক পরে তার আবদাল্লাহ নামের এক সন্তানকে আটক করে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ।

তার আইনজীবী দলের সদস্য আবদেল মাকসুদ ২০১৭ সালের নভেম্বরে সাবেক এই ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্টের দেখা পেয়েছিলেন।

তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধীরে ধীরে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা দ্য ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি।

এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, মুরসিকে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। চিকিৎসা নিতে দেয়া হয়নি। দুর্গন্ধযুক্ত খাবার খেতে দেয়া হয়েছে। মৌলিক মানবাধিকারের সবকিছু থেকে তাকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। আর এতে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে তাকে।

মুরসির মৃত্যু ও তার আটকাবস্থা নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত করতে মিসরীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচও একই দাবি করেছে। তারা বলছে, বছরের পর বছর ধরে মুরসিকে পর্যাপ্ত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।

সংস্থাটি আরও জানায়, মিসরের চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের একটি তদন্ত করা উচিত। বিশেষ করে সেখানের কারাগারগুলোতে ব্যাপক নিষ্ঠুরতা ও মুরসির মৃত্যু নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ও মুসলিম ব্রাদারহুড তাকে শহীদ আখ্যা দিয়ে তার রুহের মাগফিরতা কামনা করেছে।

মুরসির মৃত্যুকে বেদনাদায়ক ও দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাবি।

মিসরে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে মঙ্গলবার কড়া নিরাপত্তায় দাফন করা হয়েছে। আদালত চত্বরে পড়ে গিয়ে মৃত্যুর একদিন পর তাকে দাফন করা হয়।

এভাবে তার মৃত্যুর ঘটনায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। এক বছর দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল।

মিসরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৬৭ বছর বয়সী এই সাবেক প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হয়েছে।

পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে মেদিনাত নাসর শহরে তার দাফন সম্পন্ন হয়।