মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পেলে ফার্মেসি সিলগালা করা হবে

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০১৯ ১২:১৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২৩ বার।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেছেন, কোনো ফার্মেসিতে যদি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া যায় তবে সেই ফার্মেসি সিলগালা করা হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এক্ষেত্রে হেলাফেলার সুযোগ নেই।

সোমবার পুরান ঢাকার বংশালের ফজলুল করিম কমিউনিটি সেন্টারে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সঙ্গে বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। খবর সমকাল অনলাইন 

ওষুধ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, আপনার সন্তানকে কি আপনি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খাওয়াবেন? আপনার সন্তানকে যদি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ না খাওয়ান তবে দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ রাখেন কেন? ফার্মেসিতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দুই বছরের বেশি সময় আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া ওষুধ আছে। এরপর থেকে ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখলে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। নকল, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সম্পর্কে প্রতিটি বিভাগে সচেতনামূলক প্রোগ্রাম করা হবে। আগামী ২৬ জুন রাজশাহীতে ফার্মেসি কর্মীদের নিয়ে সচেতনামূলক প্রোগ্রাম করা হবে। তাদের ট্রেনিং করানো হবে। ফার্মেসি সার্টেফিকেট প্রশিক্ষণ কোর্স করানো হবে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট এক মাসের মধ্যে সব ফার্মেসি থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সরাতে বলছে। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২ জুলাইয়ের মধ্যে সব ওষুধ কোম্পানিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ফেরত দিতে হবে। 

মাহবুবুর রহমান বলেন, ফার্মেসিতে আনরেজিস্ট্রার্ড ও নকল ওষুধ রাখা যাবে না। ৩৯টি ওষুধের লিস্ট আছে। এসব ওষুধ বাদ দিতে হবে। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনো ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা যাবে না। অনেক জায়গায় দেখা যায়, ওষুধের মূল্য পরিবর্তন করা হয়, এটা করা যাবে না। দেশের বাইরে থেকেও নকল ওষুধ সরবরাহ করা হয়। তাই নিজস্ব অথোরাইজড সোর্স থেকে ওষুধ সংগ্রহ করতে হবে। অনেক সময় চোরাপথে আসা সরকারি কেনা হয়। এগুলো ফার্মেসিতে রাখা যাবে না। 

তিনি আারও বলেন, ওষুধ জিনিসটা অনেক সেনসিটিভ। বেশি তাপমাত্রায় রাখা যায় না। তাই প্রতিটি ফার্মেসিতে এসি ও রেফ্রিরেজটর রাখতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশের ওষুধের মান নিয়েও প্রশ্ন আছে। কিন্তু বাংলাদেশের ওষুধের মান নিয়ে কোনো কথা নেই। তাই আমাদের ফার্মেসিগুলোতে নকল, ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পরিহার করে দেশের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে হবে।

বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতির সভাপতি সাদেকুর রহমান বলেন, আমরা কোনো ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করব না। কিন্তু অনেক ওষুধ কোম্পানি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ফেরত নেয় না। তাই আগামী ২ জুলাইয়ের মধ্যে যে সব ওষুধ কোম্পানি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ফেরত নিবে না তাদের সব ওষুধ আমরা বর্জন করব। 

অভিযোগ করে তিনি বলেন, অনেক কোম্পানি মোড়ক পরিবর্তন না করেই স্টিকার লাগিয়ে দাম পরিবর্তন করে। আর এ কারণে ওষুধ বিক্রেতাদের জরিমানা দিতে হয়। তাই ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রতি অনুরোধ, কোনো কোম্পানি যেন মোড়ক পরিবর্তন না করে দাম না বাড়ায়।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এসএস শফিউজ্জামান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লায়ন মোহাম্মদ বিল্লাহ, বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের সহ-সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন প্রমুখ।