নড়বড়ে সব সেতু দ্রুত মেরামতের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০১৯ ১৫:০৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১১৮ বার।

দেশের রেল ও সড়ক পথের সব নড়বড়ে সেতু ও কালভার্ট চিহ্নিত করে দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নড়বড়ে সেতু চিহ্নিত করতে জরিপের কাজও দ্রুত শেষ করতে বলেছেন তিনি।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়কে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। খবর সমকাল অনলাইন 

একনেক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি জানান। 

এছাড়াও বিভাগীয় শহর ছাড়া অন্য কোথাও সিটি কর্পোরেশন না করা এবং সব জেলার সরকারি অফিস ভবন অভিন্ন নকশায় নির্মাণ করাও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 

সভায় ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২১টি রেল ইঞ্জিনের পুনর্বাসনের একটি প্রকল্পও অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্প অনুমোদনকালে গত রোববার কুলাউড়ায় রেল দুর্ঘটনার বিষয়টি উঠে আসে। তখন প্রধানমন্ত্রী দ্রুত সেতু মেরামতের পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। সভায় রেলের ইঞ্জিন মেরামতের এ প্রকল্পসহ মোট ১০ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

গত রোববার সিলেট থেকে ঢাকামুখী আন্তঃনগর উপবন এপপ্রেস ট্রেন ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে চার জন নিহত এবং শতাধিক যাত্রী আহত হন।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, নড়বড়ে রেল ও সড়ক সেতু চিহ্নিত করতে প্রধানমন্ত্রী সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দ্রুত মাঠে নেমে পড়তে বলেছেন। যেসব সেতু ও কালভার্ট নড়বড়ে সেগুলো সেগুলো তাড়াতাড়ি সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী চান আগামী বর্ষার মৌসুমের আগেই সংস্কার কাজ শেষ হোক। কারণ বর্ষার সময় বৃষ্টির পানিতে মাটি আরও নরম হবে। দুর্ঘটনার প্রবণতা আরও বাড়বে।

মঙ্গলবারের একনেকে ছয় হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ প্রকল্প অনুমোদন হয়। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকছে ২৪১ কোটি টাকা এবং ৪০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বিদেশি অনুদান হিসেবে।

এম এ মান্নান জানান, আন্তঃজেলা সংযোগ আরও সহজ করতে কোনো কোনো রাস্তা প্রশস্ত করতে একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে গ্রামীণ সড়ক, আন্তঃজেলা মহাসড়ক এবং জাতীয় মহাসড়কের আলাদা তালিকা করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

সভায় তিন হাজার ৮২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের রাস্তা প্রশস্তকরণসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠকে উপস্থিত সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন থেকে বিভাগীয় শহর ছাড়া অন্য কোনো শহরকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত করা হবে না।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এখন থেকে সব জেলার সরকারি অফিস ভবনগুলো অভিন্ন নকশায় নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে নকশা একই হলেও বড়, মাঝারি ও ছোট জেলার জন্য ভবনের আয়তন ভিন্ন ভিন্ন হবে। 

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে। এ প্রকল্পে জাপান সরকার প্রায় ৪০ কোটি টাকা অনুদান দেবে। রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় জাপানের ৭ জন প্রাণ হারান।

একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো-বামনডাংগা (গাইবান্ধা)-শঠীবাড়ী-আফতাবগঞ্জ (দিনাজপুর) জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ, ঢাকা অফিসার্স ক্লাব ক্যাম্পাসে বহুতল ভবন নির্মাণ, মানিকগঞ্জ বহুতলবিশিষ্ট সমন্বিত সরকারি অফিস ভবন নির্মাণ, ঢাকাস্থ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের অধিকতর উন্নয়ন, দুস্থ শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র পুনঃনির্মাণ (গাজীপুর), বৃহত্তর ফরিদপুর সেচ এলাকা উন্নয়ন (৪র্থ পর্যায়) এবং ওয়েষ্ট জোন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার সল্ফপ্রসারণ ও হালনাগাদকরণ প্রকল্প।