বগুড়ায় বিএনপিতে সাইফুল নিষ্ক্রিয় হলেও তার অনুসারীরা সক্রিয় কেন?

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০১৯ ১১:৫৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩৮৫ বার।

বিএনপির সাংগঠনিক ‘মডেল জেলা’ বগুড়ায় দলটির পুনর্গঠন নিয়ে সৃষ্ট সংঘাতময় পরিস্থিতির আপাত অবসান হলেও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দ্বন্দ্ব-কোন্দল ভেতরে ভেতরে রয়েই গেছে। যার বড় প্রমাণ দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ধরে জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসা সাইফুল ইসলামকে আহবায়ক কমিটিতে রাখার পরেও তার নিস্ক্রিয়তা।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ সত্ত্বেও সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামকে বগুড়া সদরের শূন্য আসনের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কোন প্রচার-প্রচারণায় দেখা যায়নি। অবশ্য তার বেশিরভাগ অনুসারীকে সাংগঠনিক শাস্তি মাথায় নিয়েও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় দেখা গেছে। বলা হচ্ছে বহিস্কার কিংবা পদবী স্থগিতের মত শাস্তি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে-এমন আশ্বাসের প্রেক্ষিতেই সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামের অনুসারীরা ধানের শীষের পক্ষে কাজ করেছেন।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিদ্রোহ ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের যে ১৬ নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে হাইকমান্ডের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তাদেরকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। অবশ্য নবগঠিত আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ এমন আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের দাবি আগামীতে কেউ আর বগুড়া বিএনপিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সাহস দেখাবেন না। বরং যারা এমনটা করার চেষ্টা করবে তাদের কখনোই বিএনপিতে স্থান হবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপির বগুড়া আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ দলে বিদ্রোহ ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ‘ভবিষ্যত’ নিয়ে ভাবার চাইতে তৃণমুল থেকে জেলা পর্যায়ে দলকে পুনর্গঠনের কাজেই বেশি মনোযোগ দিতে চান। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে লন্ডনে নির্বাসিত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সর্বশেষ গত ২৮ জুন স্কাইপের মাধ্যমে বগুড়া জেলার আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের কাজ পূর্ব ঘোষিত ৩ মাসের মধ্যে সম্ভব না হলেও যেন ছয় মাস পেরিয়ে না যায় সে ব্যাপারেও কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সব কমিটিতে নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়টি কুড়ি বছর আগের সেই ‘বগুড়া মডেল’-এর আদলে গোপন ব্যালটে সম্পন্ন করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি’র সেই মডেলের জেলা বগুড়া
১৯৯৯ সাল। তারেক রহমান তখন বিএনপি’র একজন সদস্য মাত্র। ওই বছরের তিনি বগুড়া বিএনপিতে গোপন ব্যালটে নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ নেন। যা বিএনপিতে ‘বগুড়া মডেল’ নামে ব্যাপক পরিচিতি পায় এবং দেশের অন্যান্য জেলাতেও ওই মডেলে গোপন ব্যালটে নেতৃত্ব নির্বাচন পদ্ধতি চালু করা হয়। এর পরে ওই মডেলে ২০০২ এবং সর্বশেষ ২০০৫ সালে নেতৃত্ব নির্বাচন হয়। অবশ্য বিএনপি ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার পর তারেক রহমান প্রবর্তিত গোপন ব্যালটে নেতৃত্ব নির্বাচন ব্যবস্থাও উধাও হয়ে যায়।
নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের
বগুড়ায় বিএনপির সর্বশেষ জেলা কমিটি গঠিত হয় ২০১১ সালের এপ্রিলে। তাতে সাইফুল ইসলাম সভাপতি এবং জয়নাল আবেদীনকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। পরে ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ১৭২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। দুই বছর পর সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের কথা থাকলেও তা হয়নি। এ নিয়ে আভ্যন্তরীণ বিরোধের প্রভাব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ওপর পড়ে। থেমে যায় যুবদল ও ছাত্রদলের পুনর্গঠনও। এমন পরিস্থিতিতে তৃণমুল থেকে বিএনপির পুনর্গঠনের দাবি জোরালো হলে কেন্দ্র থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কমিটি পুনর্গঠনের তাগাদা দেওয়া হয়। তবে সেটি ব্যর্থ হলে পরের বছর ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময়-সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সেই সময়-সীমাও পেরিয়ে যায়। পুনর্গঠনও আর হয়নি। 
পরবর্তীতে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি ঢাকা থেকে একটি টিম এসে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে সভা করে কিন্তু তাও ব্যর্থ হয়। তবে ২০১৮ সালের শুরুতে হঠাৎ করেই পুনর্গঠনের  লক্ষ্যে প্রথমে তৃণমুল পর্যায়ে কোন্দল নিরসন এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। তবে বিএনপি’র পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমুলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী দলটির জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উভয় পদেই পরিবর্তনের পক্ষে মত দেন। কিন্তু সভাপতি সাইফুল ইসলামের অনুসারীরা তাকে স্বপদে বহাল রেখে শুধু সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তনের পক্ষে অবস্থান নেন। এতে বাধ সাধেন তার বিরোধীরা। ফলে আবারও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ধাক্কা খায়।
কাঙ্ক্ষিত 
সেই পুনর্গঠন নিয়েই আবার দ্বন্দ্ব
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের দাবির মুখে দলের পুনর্গঠনের জন্য জেলা নেতৃবৃন্দকে চলতি বছরের ২৫ এপ্রিল ঢাকায় ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে আগামীতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হবেন না-এমন সিনিয়র নেতৃবন্দৃকে আহবায়ক ও যুগ্ম আহবায়ক মনোনীত করে একটি অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠনের জন্য জেলা নেতৃবৃন্দকে বলা হয়। তবে ওই সভায় বগুড়ার সাবেক সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে জেলা বিএনপির দুই নেতা পরিমল কুমার দাস ও শাহ্ মেহেদী হাসান হিমুর পদবী স্থগিত করা হয়। প্রতিবাদে ওইদিন রাতেই ওই দুই নেতার অনুসারীরা বগুড়ায় দলের জেলা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয় দেন এবং সাবেক সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। তার ৪ দিনের মাথায় তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপেদষ্টা অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমানের নেতৃত্বে পাল্টাপাল্টি দু’টি আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করে অনুমোদনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
তবে কেন্দ্র ওই দুই কমিটির কোনটিকেই অনুমোদন না করে ১৫ মে ৩১ সদস্যের নতুন আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। যাতে সাবেক সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে আহবায়ক মনোনীত করা হয়। আর সেদিন থেকেই বিলুপ্ত জেলা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলামের অনুসারীরা ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তারা দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের কুশপুত্তলিকাও দাহ করেন। ওই ঘটনায় কেন্দ্র থেকে যুবদলের ৬ নেতাকে বহিষ্কারসহ বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আরও ৮ নেতার পদবী স্থগিত করা হয়। এতে আহবায়ক কমিটি বিরোধীরা প্রচ- ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা আন্দোলন আরও জোরদার করেন। মাঝে একদিন আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকলেও পরে আবারও তাতে তালা ঝুলিয়ে দেন পদ বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। 
পরে আহবায়ক কমিটির পক্ষ থেকে বিদ্রোহীদের সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হলেও সেটি তারা মানতে রাজি হননি। এমন পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবক দল এবং যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি বরং আহবায়ক কমিটির পক্ষের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা এবং পাল্টা হিসেবে বিরোধী পক্ষের নেতা বিলুপ্ত জেলা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলামের বাসভবনে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এরই মধ্যে জেলা কমিটির আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে বগুড়া-৬ (সদর) শূন্য আসনের নির্বাচনে দলের প্রার্থী করায় বিরোধীদের ক্ষোভ আরও চড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ৩০ মে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকীও দুই পক্ষ আলাদাভাবে পালন করেন। তাছাড়া ওইদিন আহবায়ক কমিটির পক্ষ থেকে শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তনে দোয়া ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হলেও বিদ্রোহী পক্ষ তাতে না গিয়ে তালাবদ্ধ দলীয় কার্যালয়ের সড়কে বসে ইফতার সারেন।
হঠাৎ সমঝোতা
প্রায় ২০ দিন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া বিদ্রোহী গ্রুপটি ঈদের পর হঠাৎ করেই ‘সমঝোতা’য় রাজি হয়ে যান। গত ৬ জুন বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা দলীয় কার্যালয়ের তালা খুলে দেন। সূত্রগুলো জানায়, লন্ডন থেকে তারেক রহমান বিদ্রোহীদেরকে দলে ‘ফিরে আসা’র চুড়ান্ত আহবান জানানোর পর তাদের টনক নড়ে। তবে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শর্ত দেওয়া হয়, ২৪ জুন বগুড়া-৬ (সদর) শূন্য আসনের নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দলের জেলা কমিটির আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে নেওয়া সাংগঠনিক শাস্তিগুলো প্রত্যাহার করা হবে। জানা যায়, তারেক রহমানের সেই ঘোষণায় বিদ্রোহীরা রণে ভঙ্গ দিলেও সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম এখনও নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন।
হঠাৎ সমঝোতার কারণ জানতে চাইলে বিদ্রোহী গ্রুপের অন্যতম নেতা বিলুপ্ত জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিমল কুমার দাস বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশেই তারা সমঝোতায় রাজী হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘লিডার (তারেক রহমান) আমাদের দলে সক্রিয় হতে বলেছেন। তিনি তো আমাদের নেতা। তার নির্দেশ তো আমরা অমান্য করতে পারি না।’ আর ‘সমঝোতা’য় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনকারী যুবদলের বিলুপ্ত জেলা কমিটির সভাপতি সিপার আল বখতিয়ার সমকালকে বলন, ‘আমরা সবাই জিয়ার সৈনিক ছিলাম, আছি এবং থাকবো। তবে আমাদের মধ্যে কিছু ভুল বুঝাবুঝি ছিল। তবে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যাান তারেক রহমান আমাদের সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে এক থাকতে বলেছেন।’ তবে বিদ্রোহী নেতাদের অনেকেই নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছেন, সাংগঠনিক শাস্তি প্রত্যাহারের পাশাপাশি তাদেরকে আহবায়ক কমিটিতেও অন্তর্ভূক্ত করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। যদি সেটা করা না হয় তাহলে আবারও তারা আন্দোলনে নামবেন।
কেন এই বিশৃঙ্খলা
তারেক রহমান ঘোষিত মডেল জেলা বগুড়ায় বিএনপিতে কেন এই বিশৃঙ্খলা- এমন প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে পুণ্ড্রকথা। কথা বলেছে বিএনপির তৃণমুল থেকে জেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং দলটির সহযোগী সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও। তাদের কথায় নেতৃত্ব আঁকড়ে ধরে থাকার প্রবণতা, নেতাদের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা এবং সর্বোপরি ওয়ান ইলেভন পরবর্তী এক যুগেও দলের সাংগঠনিক কাঠামো মজবুত করতে না পারার ব্যর্থতার কারণেই নিজেদের দূর্গ বগুড়ায় বিএনপির এই বেহাল দশা। 
প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুর রহিম বগরার মতে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান হওয়ার কারণে বগুড়ার অধিকাংশ মানুষ তাঁর প্রতিষ্ঠিত দলের সমর্থক। কিন্তু জিয়াভক্ত জনগণের সমর্থনকে কাজে লাগিয়ে সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী করার মত কাজ কখনোই বিএনপি করতে পারেনি। বিশেষত ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময়ে যারা বগুড়ায় দলটিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তারা বিএনপিকে গণমুখী করতে পারেননি। শুধু শীর্ষ নেতৃত্বকে খুশি করতে ‘ফটোসেশন নির্ভর’ কর্মসূচীর প্রতিই বেশি মনোযোগ লক্ষ্য করা গেছে। তিনি বলেন, ‘শীর্ষ নেতৃত্বকে খুশি করার প্রবণতার কারণে একদিকে যেমন নেতৃত্ব বিকশিত হয়নি তেমনি বার বার হুংকার দেওয়া হলেও আন্দোলন-সংগ্রামে প্রকৃত অর্থে জনগণের দেখা মেলেনি।’ 
দলে নিষ্ক্রিয়তার কারণ জানতে বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে কিছুদিন আগে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তো এখন আর কোন দায়িত্বে নেই। তাই কোন কথা বলাও সমীচিন হবে না।’ বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ অবশ্য দাবি করেছেন অতীতে যাই কিছু হোক না কেন বর্তমানে বগুড়া বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। বিদ্রোহীদের সাংগঠনিক শাস্তি প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার (২৮জুন) আমিসহ আহবায়ক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপেতে কথা বলেছেন। এ সময় আমরা দলীয় পদবী স্থগিত রাখা ও বহিস্কৃতদের বিষয়টি তুলেছিলাম। কিন্তু কথা বলে মনে হয়েছে তিনি তাদের কর্মকাণ্ডে বিশেষত দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনায় খুব কষ্ট পেয়েছেন। তবে তার পরেও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব। আশাকরি তিনি সবাইকে ক্ষমা করে দিবেন। তবে এ জন্য সময় লাগতে পারে।’