বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখানো হবে ‘পাখির ভাষায়’ কথা বলা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০১৯ ১৫:১০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৮৬ বার।

কোনো শব্দ উচ্চারণ না করেই সুরে সুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে মানুষ। শুধু শিষ বাজিয়ে মনের ভাব আদান প্রদান করে তারা। তুরস্কের প্রত্যন্ত এক গ্রামের মানুষ এভাবেই সুরে সুরে কথা বলে আসছে যুগ যুগ ধরে।

‘পাখির ভাষা’ হিসেবেই পরিচিত ভাষাটি। সেই গ্রামটির নাম কুসকোয়, যার অর্থ পাখিদের গ্রাম।

গিরেসান প্রদেশের অঞ্চলটি সবুজ পাহাড় ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ের মানুষ দূর থেকে এখনো এই ভাষায় যোগাযোগ সেড়ে নেয় অনায়েশেই।

ডেইলি সাবাহ জানায়, সেই পাখির ভাষা এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য হলো। এই প্রথমবারের এ রকম একটি কোর্স চালু করল গিরেসান ইউনিভার্সিটির টুরিজম ফ্যাকাল্টি।

বিশ্ববিদ্যালয়টি সূত্রে জানা গেছে, টুরিজম ফ্যাকাল্টির রিক্রিয়েশন স্টাডিজের শিক্ষার্থীদের এই পাখির ভাষাটি শিক্ষা দেওয়া হবে। পরবর্তীতে তিন বছরের একটি লম্বা কোর্স চালু করা হবে এই ভাষার ওপরে।

টুরিজম ফ্যাকাল্টির ডিন প্রফেসর মুসা জেনক বলেন, “এই শীষধ্বনির ভাষা ২০১৭ সালে ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। শতকের পর শতক ধরে ভাষাটিতে কথা বলে আসছে গ্রামটির মানুষ।”

তিনি জানান, ১৯৫৬ সালে একটি ভাষাতাত্ত্বিক গবেষণায় এই ভাষা প্রথম নজরে আসে গবেষকদের কাছে। ১৯৬৮ সালে এ নিয়ে প্রথম গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়। এরপরেই বিশ্বব্যাপী ভাষাটি সম্পর্কে জানাজানি হয়।

এই গবেষক আরও বলেন, “স্থান পরিবর্তন বা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার ফলে এই ভাষায় কথা বলা মানুষের সংখ্যা আগের তুলনা অনেক কমে এসেছে। এ ছাড়া মোবাইল ফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়াতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, এমনটা জানিয়েছে ইউনেসকো।”

এমন পরিস্থিতি আশঙ্কা করা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত ‘লোক দেখানো’ একটি ভাষায় পরিণত হবে এটি।

প্রফেসর মুসা বলেন, “এ জন্য আমাদের ভাষা-সংস্কৃতির এই ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই ভাষা ছড়িয়ে দিতে চাই।”  

প্রসঙ্গত, তুরস্কের মতো আরও কয়েকটি দেশে এই ‘পাখির ভাষা’র অস্তিত্ব আছে। মেক্সিকো, ফ্রান্স, গ্রিসের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কয়েকটি গ্রামের মানুষ শীষধ্বনির মাধ্যমে যাবতীয় যোগাযোগ সাড়ে, পরস্পরের মনের ভাব আদান প্রদান করে। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের অভিবাসী ও শরণার্থী সংকটের কারণে মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে এই ভাষাটি এখন অস্তিত্বের হুমকির মুখে। দেশ দেশ রুপান্তর।