এবার মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনলো বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০ শিক্ষার্থী

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট:
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:৫৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৩০৮ বার।

এবার মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনলো বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার বিদ্যালয় মিলনায়তনে বিদ্যালয়ের অন্তত ২০০ শিক্ষার্থীর কাছে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথা লড়াইয়ের গল্প শোনান রণাঙ্গনের বীর যোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বগুড়া সদর উপজেলার সাবেক কমান্ডার কামরুল হাসান মোজাম। বগুড়া জেলা প্রশাসন ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের উপদেষ্টা ডা. আরশাদ সায়ীদ। বক্তৃতা করেন বগুড়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জে এম রউফ। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সমন্বয়কারী এটিএম রাশেদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে ফুলসহ বই উপহার দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করা হয়। প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিলো স্বতোস্ফূর্ত এবং ক্যুইজ পর্বে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে অর্জন করেছে মুক্তিযুদ্ধের বই পুরস্কার। এর আগে বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনানো হয়। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থীকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনানো হয়েছে এবং জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই ধারাবাহিকভাবে এ আয়োজন চলবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুল হাসান মোজাম বগুড়ায় বিভিন্ন অপারেশনের তথ্য শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন গল্প আকারে। তার অপারেশনের মধ্যে ছিলো বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিকলে ট্রান্সমিটার ধ্বংস, রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্নে মাইন বিষ্ফোরণ, মাসুদ নগরের শহীদ মাসুদের সহযোদ্ধা হিসেবে অপারেশনের ঘটনা ইত্যাদি। তিনি  শানান ১৯৭১এর বীরত্ব গাঁথার সঙ্গে মিশে থাকা আবেগ এবং জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা। কতোটা কষ্ট করে দেশ স্বাধীন করেছেন সে কথাও তাদের গল্পে উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে হারানোর গভীর মনোবেদনা এবং কুচক্রি-হত্যাকারীদের প্রতি ক্ষোভ-ধিক্কারের কথাও। মুক্তিযোদ্ধা তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিজেদের গড়ে তুলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় রূপান্তরে যথাযথ ভূমিকা পালনে।
দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও সদ্য বিদায়ী বগুগড়ার জেলা প্রশাসক জনাব নূরে আলম সিদ্দিকীকে বই, ফুল ও শুভেচ্ছা স্মারক পোড়ামাটির টেরাকোটা দিয়ে বিদায়ী সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এছাড়াও সদ্য বিদায়ী জেলা প্রশাসককে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বগুড়ার ‘কমরেড চিত্তরঞ্জন ভট্টাচার্য্য স্মৃতি পাঠাগার’-এর সদস্য পদ প্রদান করা হয়। বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী দেশের ভবিষ্যত আগামী প্রজন্ম শিক্ষার্থীদের প্রচুর পড়ালেখার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ সেবায় নিয়োজিত থাকার কথা বলে। তিনি বলেন, ‘একমাত্র বাংলাদেশেই সম্ভব হয়েছে সরাসরি মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে দেশ স্বাধীন হবার ইতিহার শোনার সৌভাগ্য অর্জন করার। কারণ এভাবে দেশের জন্মকথা সরাসরি যোদ্ধাদের মুখে শোনার সৌভাগ্য অন্য কোন দেশের ভাগ্যে জোটেনি। তাই নিজেদের সমৃদ্ধ করতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়।’